যুগের নারায়ণগঞ্জ:
গত কয়েকদিন ধরেই জিয়া পরিবারকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুবলীগ কর্মীর জুয়েল রানার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় যুবলীগ কর্মী জুয়েল রানা বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদাজিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যসহ আশ্রাব ভাষায় গালিগালাজ করতে দেখা গেছে এবং যারাই বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত তাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়েছে ভাইরাল ভিডিওতে। অপরদিকে, অভিযুক্ত যুবলীগ কর্মী জুয়েল রানা দাবি করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি এডিট করানো। একটি স্বার্থন্বেষীমহল তার বিরুদ্ধে এডিট করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আর্থিকভাবে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে।
এদিকে, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদাজিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যুবলীগ কর্মী জুয়েল রানাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়াসহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি উঠেছে।
তবে, জিয়া পরিবারকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেডে বেড়ালেও রহস্যজনক কারনে নীরব রয়েছে জেলা ও ফতুল্লা বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
ভিডিওটির সত্যতা যাচাইসহ এ ধরনের ঘৃণ্যতম ঘটনার সাথে জড়িতদের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, স্বেরাচারী হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল আলীর কর্মী হিসেবে বিভিন্ন মিছিল মিটিংয়ে যোগদান করতেন জুয়েল রানা। যুবলীগ নেতা বিসিক সোহেল ওরফে তেল্লা সোহেলের নেতৃত্বে জুয়েল রানা যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।
আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকাকীন সময়ে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কে দাড়িয়ে মাতাল অবস্থায় যুবলীগ কর্মী জুয়েল রানা বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদাজিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং একমাত্র কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য এবং অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন। এসময় যুবলীগ কর্মী জুয়েল রানাকে পাশ থেকে পদ বিহীন যুবলীগ নেতা পরিচয়দানকারী বিসিক সোহেল কুরুচিপূর্ণ কথোপকথনগুলো শিখিয়ে দিচ্ছেন এবং সোহলের শেখানো কথাই মাতাল অবস্থায় যুলীগ কর্মী জুয়েল রানা বলে আসছিলেন । কথা মতই যুবলীগ কর্মী জুয়েল রানা জিয়া পরিবারকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করে আসছিলেন বলেও একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রসঙ্গ, গত কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) এ এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে আসছে। জিয়া পরিবারকে নিয়ে এমন আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে যুবলীগ কর্মী জুয়েল রানার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। এমনকি যুবলীগ কর্মী জুয়েলকে যেখানেই পাওয়া যাবে গণপিটুনি দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত দলীয় নেতাকর্মীরা পোষ্ট করে যাচ্ছেন।
অপরদিকে,যুবলীগ কর্মী জুয়েল রানা নিজেকে উক্ত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ এবং উল্লেখিত ঘটনার সাথে তাকে নিরপরাধ দাবি করে তার নিজ বাসভবনে কথিত এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। যুবলীগ নেতা জুয়েল রানার পরিচিত দু একজন সাংবাদিকের মাধ্যমে কথিত এ সংবাদ সম্মেলন দাবি করা হয়, উক্ত ভিডিওর বিষয়ে সে কিছুই জানেন না। জুয়েল রানা নিজেকে যুবদল নেতা পরিচয় দিয়ে বলেন, একটি ব্ল্যাকমেইলিং চক্র পূর্ব পরিকল্পিত ভাব এমন ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছেন। এমনকি, ভাইরাল ভিডিওর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে, এনায়েতনগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমন, যুবলীগ কর্মী জুয়েল রানার গ্রেফতার দাবী করেছেন। বিএনপি নেতা সুমন এ সময় বলেন, আমরা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি করি। জিয়া পরিবারকে নিয়ে কেউ কটুক্তি করলে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরন হয়।
সুমন আরো বলেন, জুয়েল রানা গডফাদার শামীম ওসমানের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য ছিলেন।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উত্তেজিত করতে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে বেগম জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছেন যুবলীগ কর্মী জুয়েল রানা। এমনকি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে না যাওয়ার আগেই জুয়েল রানাকে গ্রেফতার করে আইনের শাসন প্রতিষ্টা করা দাবি জানান তিনি।