যুগের নারায়ণগঞ্জ:
সেলিম ওসমান ২০১৪ সালে তাঁর বড় ভাই নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে সংসদ সদস্য বাগিয়ে নেন। এরপর ২০১৮ সালের একাদশ ও ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি এমপির চেয়ারটি দখলে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।
সূত্র আরো জানায়, বিকেএমইএরও টানা ১৪ বছর তিনি সভাপতি পদটি দখলে রেখে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে ৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে থেকেই একটি চিঠি পাঠিয়ে সভাপতির পদ থেকে তিনি পদত্যাগও করেন।
এদিকে সংসদ নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় সেলিম ওসমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে আরো অনেক সম্পদ থাকার তথ্য সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, সেলিম ওসমানের মালিকানাধীন পাঁচটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটি চলমান বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়।
এ ছাড়া তাঁর বার্ষিক আয় এক কোটি ৬৭ লাখ টাকা এবং তাঁর ওপর নির্ভরশীল স্ত্রী ও কন্যার আয় এক কোটি ৫৩ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়।
সেলিম ওসমানের নগদ ও ব্যাংকে জমা রাখা টাকাসহ অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ সাত কোটি ৮৭ লাখ ২৯ হাজার ৮০২ টাকা উল্লেখ করা হয়। স্ত্রী ও কন্যার নামে একই খাতে সম্পদের পরিমাণ চার কোটি ৩২ লাখ ২৭ হাজার ৮০৭ টাকার কথা উল্লেখ রয়েছে।
তাঁর স্থাবর সম্পদের পরিমাণ রয়েছে ১০৮ শতাংশ জমি এবং ৯ শতাংশ জমির ওপর এক কোটি ২৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা মূল্যের তিনতলা বাড়ি।
এ ছাড়া ঢাকার ইনার সার্কুলার রোডে ১৭ লাখ ৮৩ হাজার টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট এবং ফাইভ স্টার ফার্ম হাউসে পাঁচ কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা উল্লেখ আছে। তাঁর স্ত্রী ও কন্যার নামে জমি রয়েছে দুই হাজার ৬১৩ শতাংশ। এর মধ্যে খুলনার ফুলতলা উপজেলাতেই রয়েছে দুই হাজার ৪৩৪ শতাংশ কৃষি জমি।
তাঁদের স্থাবর সম্পদের মধ্যে আরো রয়েছে স্ত্রীর নামে ধানমণ্ডিতে ৩৯ লাখ টাকা মূল্যের ৪২৮৬ বর্গফুটের ফ্ল্যাট এবং থ্রি স্টার ফার্ম হাউসে এবং উইজডম অ্যাটেয়ার্সে প্রায় ১১ কোটি টাকার বিনিয়োগ। ধানমণ্ডিতে তিন মেয়ের নামে রয়েছে তিন কোটি ১১ লাখ টাকার তিনটি ফ্ল্যাট। সেলিম ওসমানের নিজের ও স্ত্রী-কন্যার নামে দেনা ও ঋণ ছিল প্রায় ১১ কোটি টাকা।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে বিগত শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেলিম ওসমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
ওসমান পরিবারের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সাংসদ শামীম ওসমান এবং তাঁর বড় ভাই জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ সেলিম ওসমান ও সাবেক সাংসদ মরহুম নাসিম ওসমানের পুত্র আজমীর ওসমানসহ ওই পরিবারের একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার গত মঙ্গলবার দুপুরে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ওসমান পরিবারের একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩০টিরও বেশি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সব মামলাই তদন্তাধীন আছে। তদন্ত শেষে যথাসময়ে চার্জশিট দেওয়া হবে।
সূত্র: কালেরকন্ঠ