যুগের নারায়ণগঞ্জ:
সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল আরামবাগের আয়েশা সিদ্দিকা মানহা (৫) নামের দুই বছর চার মাস আগে নিখোঁজ শিশুকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা লোকাল এডুকেশন এন্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন – লিডো।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে লিডোর প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার জিডি এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসারের মাধ্যমে শিশুটিকে তার অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করেন।
গত ৯ ডিসেম্বর তারিখে মান্ডা এলাকায় দুজন মহিলা আয়েশা নামের আনুমানিক ৫ বছরের একটি শিশুকে পেয়ে মুগদা থানায় দিয়ে যায়। শিশুটি কোনো ঠিকানা বলতে পারে না, বিধায় মুগদা থানা থেকে লিডোর সহযোগিতা চাইলে লিডোর সমাজকর্মীরা তাকে থানার ৪৩২ নং জিডির মাধ্যমে উদ্ধার করে সেতুবন্ধন শেল্টার কমলাপুরে সাময়িক আশ্রয় প্রদান করে।
লিডোর ট্রানজিশনাল শেল্টার সেতুবন্ধন কমলাপুর শাখার সোশ্যাল মোবিলাইজার মো. মাসুদ মাহাতাব জানান, শিশুটি শেল্টারে আনার পর তার ঠিকানা জানার চেষ্টা করা হয়, কিন্তু সে কিছুই বলতে পারে না। তবে সে বলে তার বাসা অনেক দূরে এবং তার বাবার নাম গাজি, মায়ের নাম রুপালি। শিশুটি জানান, তার বাবা তাকে ভালোবাসে, কিন্তু মা তাকে মারধর করত এবং বুকের নিচে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
লিডোর সমাজকর্মীরা বিভিন্ন থানার সাথে যোগাযোগ করেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশুটির ছবি প্রকাশ করা হয়। এর পর জানা যায়, ২০২২ সালে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে নিখোঁজ হওয়া আয়েশা সিদ্দিকা মানহা এই শিশুটি।
২০-৩০ জনের কাছে শিশুটির ছবি পাঠিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর ২৪ ডিসেম্বর শিশুটির পরিবারকে খুঁজে বের করা হয় এবং তাদেরকে মুগদা থানায় নিয়ে আসা হয়। শিশুটির পরিবারের সদস্যরা শিশুটির সাথে সরাসরি দেখা করে তাকে চিহ্নিত করেন। পরে, আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ২৪ ডিসেম্বর শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শিশুটির বাবা হাসান চৌধুরী ও মা নিপা জানান, তাদের মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা মানহা দুই বছর চার মাস আগে নিখোঁজ হয়েছিল। তারা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেছেন এবং পত্রিকায় সংবাদও দিয়েছিলেন, কিন্তু এতদিন তাদের মেয়ের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তারা জানিয়েছেন, তারা ভাবতে পারেননি যে এত বছর পর তাদের মেয়েকে ফিরে পাবেন। লিডো এবং পুলিশের সাহায্যে তাদের মেয়েকে ফিরে পেয়ে তারা অত্যন্ত খুশি।
শিশুটির পরিবারের দাবি, যে পরিবারে আয়েশা ছিল, তাদের যেন প্রশাসন খুঁজে বের করে। তারা লিডো সংস্থার প্রতি চিরকাল কৃতজ্ঞ, যে এত বছর পর তাদের মেয়েকে সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছে।