
যুগের নারায়ণগঞ্জ:
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খুনি, অপরাধী, শীর্ষ সন্ত্রাসী, ধর্ষণ মামলার আসামী ছাড়াও বিভিন্ন মামলার আসামিরা যেন একের পর এক নারায়ণগঞ্জকে আত্মগোপনের নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বেছে নিচ্ছে—এমন প্রশ্ন আবারও সামনে এলো।সর্বশেষ মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী সৈকতকে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে।
র্যাব-১১ জানায়, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মিজমিজি এলাকায় অভিযান চালিয়ে সৈকতকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় নিজ বসতবাড়ি থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি দেশীয় শটগান ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের তথ্যমতে, গ্রেপ্তার সৈকত মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোগলাকান্দি গ্রামের কুখ্যাত ‘লালু বাহিনী’র দ্বিতীয় প্রধান। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ একাধিক গুরুতর মামলার অভিযোগ রয়েছে।
গত ২৬ নভেম্বর গজারিয়ার চৌদ্দকাউনিয়া গ্রামে জহিরুল ইসলাম জয় নামে এক যুবক হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া গুয়াগাছিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা এবং মান্নান নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায়ও সে অভিযুক্ত।
র্যাব-১১-এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার নঈম উল হক শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে জানান, গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১ সিপিএসসি, নারায়ণগঞ্জের একটি যৌথ দল অভিযান পরিচালনা করে। গ্রেপ্তার শেষে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় সৈকতকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর আগেও বহু চাঞ্চল্যকর ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ থেকে ভিন্ন জেলার অপরাধী ও আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশজুড়ে আলোচিত ওসমান হাদীর ওপর গুলির ঘটনায় জড়িত ফয়সাল করিমের সহযোগীদেরও আটক করা হয়েছিল নারায়ণগঞ্জ থেকে। একইভাবে শরীয়তপুরের একটি ধর্ষণ মামলার অন্যতম আসামিকেও নারায়ণগঞ্জে আত্মগোপন অবস্থায় গ্রেপ্তারের নজির রয়েছে।
একাধিক ঘটনায় নারায়ণগঞ্জে বাইরের জেলার সন্ত্রাসীদের অবস্থান নতুন করে প্রশ্ন তুলছে—অপরাধীরা কেন বারবার এই নারায়ণগঞ্জ জেলাকে আত্মগোপনের জন্য বেছে নিচ্ছে ? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়লেও অপরাধীদের এই প্রবণতা স্থানীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।