
যুগের নারায়ণগঞ্জ:
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদী ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের স্ত্রী, শ্যালক ও এক বান্ধবীসহ তিনজনকে আটক করেছে র্যাব। তবে ঘটনার পর থেকে ফয়সল করিম এখনো পলাতক রয়েছে।
র্যাব সদরদপ্তরের গণমাধ্যম শাখার একটি সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফয়সলের স্ত্রী সামিয়া, শ্যালক শিপু ও বান্ধবী মারিয়াকে আটক করা হয়। পরে তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে গুলিবিদ্ধ হন ওসমান হাদী। তিনি তখন একটি চলন্ত ব্যাটারিচালিত রিকশায় ছিলেন। পেছন থেকে একটি মোটরসাইকেলে এসে আততায়ী তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। মাথায় গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদী বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা এখনো শঙ্কামুক্ত নয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, আগামীকাল তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে গুলিবর্ষণের ঘটনায় ফয়সল করিমকে প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওসমান হাদীর প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারসহ বিভিন্ন স্থানে ফয়সল করিমের সঙ্গে তার কিছু সাম্প্রতিক ছবি পাওয়া গেছে। এসব ছবিতে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে হামলাকারীর চেহারার সাদৃশ্য রয়েছে বলে দাবি উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
ফয়সল করিম কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সদস্য ছিলেন। তাকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
এর আগে, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবর এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের একটি অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সল করিম। ওই মামলায় ৭ নভেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তখন তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, তিনটি মুঠোফোন ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে তিনি জামিন পান।
র্যাব জানায়, হামলার আগের রাতেও ফয়সল করিম নারায়ণগঞ্জে ছিলেন। র্যাবের পরিচালক উইং কমান্ডার এমজেডএম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, ঘটনার আগের রাতে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে অবস্থান করেন। ঘটনার দিন ভোরে তিনি বেরিয়ে যান এবং পরে ঢাকায় তার বান্ধবীর বাসায় ওঠেন।
ফয়সল করিমকে গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।