
যুগের নারায়ণগঞ্জ:
মুক্তিযুদ্ধের ৫৪ বছর উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে এক সাংস্কৃতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর ২০২৫) বিকাল সাড়ে ৪টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশটি বিকাল সাড়ে ৩টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও অনুষ্ঠানের আগেই পুলিশের বাধার মুখে পড়ে আয়োজকরা। আয়োজকদের অভিযোগ, মঞ্চে ব্যানার লাগানো, সাউন্ড ও মাইক সেটিং এবং লাইট জ্বালানোর সময় পুলিশ বাধা দেয় এবং কিছু সময়ের জন্য সাউন্ড ও মাইক সরঞ্জাম আটক করে রাখে।
পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানায়, কোনো ব্যানার টানানো যাবে না, মাইক বা সাউন্ড বাজানো যাবে না এবং আলো ব্যবহার করা যাবে না।
এ নিয়ে উপস্থিত কর্মী-সমর্থক ও দর্শকদের সঙ্গে পুলিশের প্রায় এক ঘণ্টা তর্ক-বিতর্ক চলে। পরে পুলিশ সরে গেলে নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘণ্টা পর বিকাল সাড়ে ৪টায় সমাবেশ শুরু হয়।
বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মনি সুপান্ত, বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিমল কান্তি দাস, গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কবি রঘু অভিজিৎ রায় প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দুইশো বছরব্যাপী ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা, ১৯৬৮-৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচন- এই ধারাবাহিক সংগ্রামের মধ্য দিয়েই ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগে অর্জিত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ। এই দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায়ই গড়ে উঠেছে আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি।
তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ৫৪ বছর পরেও মানুষের মুক্তির সংগ্রাম শেষ হয়নি। আজও অসমাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। শ্রেণিহীন, বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠাই মানুষের চূড়ান্ত লক্ষ্য হওয়া উচিত।
বক্তারা আরও বলেন, বর্তমান সময়ে সংস্কৃতির ওপর নানা ধরনের আগ্রাসন চালানো হচ্ছে। এসব আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। কোনো অবস্থাতেই সংস্কৃতির ওপর আঘাত মেনে নেওয়া যাবে না।
বক্তারা স্পষ্টভাবে বলেন, “আমরা আর কোনোভাবেই মধ্যযুগে ফিরে যেতে চাই না।”
সাংস্কৃতিক সমাবেশে আলোচনা সভার পাশাপাশি কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ, আবৃত্তি, নৃত্য, মূকাভিনয় ও সংগীত পরিবেশন করা হয়।