1. admin@jugernarayanganj.com : jugernaraya nganj nganj : jugernaraya nganj nganj
  2. multicare.net@gmail.com : যুগের নারায়ণগঞ্জ :
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২৪ পূর্বাহ্ন

আইনজীবী সমিতির ব্যর্থতা: কোর্টপাড়ায় টাউট বাটপার প্রতারকের মহামারী!

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১০৭ বার পড়া হয়েছে

যুগের নারায়ণগঞ্জ:

নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতপাড়ায় প্রতারকের মহামারী আকার ধারণ করেছে। আইনজীবী সমিতির বর্তমান কার্যকরী পরিষদের কোনো তদারকি না থাকায় কোর্টপাড়ায় এখন প্রতারক দালালদের আশ্রয়স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বিচারপ্রার্থী ও সাধারণ মানুষ। গত ৫ আগস্টের পর কোর্টপাড়ায় এখন দালাল চিটার বাটপার ও প্রতারকদের ব্যাপক আনাগোনা বেড়েছে। এরি সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পেশকার পিয়ন ও কোর্ট পুলিশদের দৌড়াত্ব। ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই হচ্ছেনা। আইনজীবীরাও তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। সমিতির বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান সেদিকে নজর দিচ্ছেন না।

কোর্টপাড়া সূত্রে, বিগত আওয়ামীলীগ সরকার আমলে আইনজীবী সমিতিতে অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও অ্যাডভোকেট মোহসীন মিয়া নিয়মিত কোর্টপাড়া থেকে দালাল ও প্রতারক হটাতে নামকাওয়াস্তে অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। যেসব শিক্ষাণবিশ বার কাউন্সিলের নির্ধারিত লাল টাই ও সাদা শার্ট পরিধান করেনি তাদেরকে কোর্ট থেকে বের করে দিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে এক যুগ ধরে কোর্টপাড়ায় শিক্ষাণবিশ, এমন ব্যক্তিরাও নিজেদের আইনজীবী পরিচয় দিয়ে বিচারপ্রার্থী ও সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছেন। আইনজীবী না হয়েও আইনজীবী পরিচয় দিয়ে কোর্টপাড়ায় ধাবিয়ে বেড়াচ্ছে এমন ব্যক্তির সংখ্যা হাজার খানিক ছাড়িয়েছে। হাজারের কাছাকাছি শিক্ষাণবিশ থাকলেও তাদের কেউই লাল টাই পরিধান করছেন না। কারন লাল টাই পরিধান করলে প্রতারণার ফাঁদ বন্ধ হয়ে যাবে। বিচারপ্রার্থীদের কাছে ধরা খেয়ে যাবে তারা আইনজীবী নন। কয়েক শ মুহুরী নিজস্ব আইনজীবী ছাড়াই নিজেরাই মামলা পরিচালনা করে যাচ্ছেন অহরহ। শতাধিক মুহুরী আছেন যাদের নিজস্ব একক কোনো আইনজীবী নাই। মুহুরীরাই দালালির মাধ্যমে ভুয়া সীল ব্যবহার করে আইন পেশা পরিচালনা করে আসছে।

আইনজীবীদের অনেকেই জানিয়েছেন, দুুপুরের পর থেকে বিভিন্ন থানা থেকে আসামীদের বহনকারী গাড়ি আনার সঙ্গে সঙ্গে কিছু দালাল গাড়ির দিকে ছুটে যায়। সেখান থেকে আসামীদের সাথে কথা বলে ওকালতনামায় স্বাক্ষর নিয়ে মামলা আইনজীবীদের মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছে দালাল শ্রেণির লোকজন। সিভিল কোর্ট ও ফৌজদারী আদালতে ভরপুর থাকে আইনজীবীদের বাহিরের লোকজন। অনেকেই কালো কোট পড়ে কোর্টে ঢুকে আইনজীবী পরিচয়ে। কিন্তু কার্যকরী পরিষদের শীর্ষ নেতারা কোনো তদারকিও করছেন না। লাগামহীন ও নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে কোর্টপাড়া। কে আইনজীবী এবং কে আইনজীবী নন সেটা বুঝতে পারছেনা বিচারপ্রার্থী ও সাধারণ মানুষ। গাউন কোট পরিধানে শিখিল থাকার সুযোগে কোর্টপাড়ায় শুধুমাত্র কালো কোট ও সাদা শার্ট পরিধান করে আইনজীবী সেজে কোর্টে কাজ করছে হাজারের অধিক ব্যক্তি।

আইনজীবীরা আরো জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৫ সেপ্টেম্বর বর্তমান পরিষদ আইনজীবী সমিতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে এক দফা শিক্ষাণবিশদের ভাইভা নেয়া হয়। লাল টাই দেয়া হলেও কেউই লাল টাই পড়ছেনা বিচারপ্রার্থী ও সাধারণ মানুষ শিক্ষাণবিশ হিসেবে চিনে ফেলবে বিধায়। কালো কোট ও সাদা শার্ট পরিধান করলে বিচার প্রার্থী ও সাধারণ মানুষের মাঝে আইনজীবী পরিচয় দেয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে পরিচয় না দিলেও বিচারপ্রার্থী ও সাধারণ মানুষ ধরেই নেয় তিনিও আইনজীবী।

আশ্চর্য্যের বিষয় হলো- কোর্টপাড়ায় আইনজীবী সমিতির ১৭ জনের মধ্যে যাদের সাথে শিক্ষাণবিশ রয়েছেন, অর্থাৎ পিপি, স্পেশাল পিপি, জিপি, অতিরিক্ত পিপিদের সঙ্গে যারা শিক্ষাণবিশ রয়েছেন তারাই বার কাউন্সিলের নির্দেশমতে লাল টাই পরিধান করছেনা। তারা আইনজীবী হওয়ার আগেই আইনজীবী পরিচয় দিচ্ছেন কোর্টপাড়ায়। এ ছাড়াও কোর্টপাড়ায় কোর্ট ফি, ওকালতনামা, বেলবন্ড যাচাই বাচাই অভিযান পরিচালনা করছেন না। প্রতিটা কোর্টে অপরিচিত কিংবা আইনজীবীদের বাহিরের লোকজনকে দেখলেও সমিতির নেতারা তাদেরকে কিছুই বলছেন না। দালাল শ্রেণির মুহুরী ও দালালদের মামলা পরিচালনায় দেখা যায় আইনজীবী সমিতির সিনিয়র আইনজীবীদেরই বেশি। এসব কারণে নারায়ণগঞ্জ কোর্টপাড়া যেনো এখন ঘুষ দুর্নীতি প্রতারকের মহাযজ্ঞ চলছে। এর শেষ কোথায়?

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট