যুগের নারায়ণগঞ্জ:
দুই বছর আগে নিজ বাসা থেকে সুমা আক্তার নামে ৩০ বছর বয়সী এক নারীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের পরিবারের ধারণা ছিল, বাড়িতে চুরি করতে এসে কেউ সুমাকে হত্যা করেছিল। কিন্তু ঘটনার দুই বছর পর জানা গেছে, নিহতের ছোটবোনের সঙ্গে তার স্বামীর প্রেম ছিল এবং পরিকল্পিতভাবেই তার স্বামী খুন করেছিলেন ওই নারীকে।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার হত্যা মামলাটির তদন্তে এমন তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল রাশেদ।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হত্যাকাণ্ডে জড়িত নিহতের স্বামী মো. শহীদুল্লাহ (৩৮) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
এর আগে ভোরে শহীদুল্লাহকে ফতুল্লার কুতুবআইল কাঠেরপুল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পিবিআই’র এসপি মোস্তফা কামাল বলেন, ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বর কুতুবআইল এলাকার একটি টিনসেড বাসা থেকে সুমা আক্তারের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল।
এ ঘটনায় নিহতের মা সাজেদা খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি শুরুতে থানা পুলিশ তদন্ত করলেও গত বছরের আগস্টে এটি পিবিআইতে হস্তান্তর হয়।
“ঘটনার সময় মামলার বাদী, অর্থ্যাৎ নিহত নারীর মা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেন চুরি করতে এসে তার মেয়েকে নৃশংসভাবে কেউ হত্যা করে পালিয়ে যায়। সে থানায় এমনটাই অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ সন্দিগ্ধ হিসেবে নিহতের বোন সোহানা আক্তারকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। মামলাটি পিবিআইতে আসার পর সোহানাকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন কিছু তথ্য পাওয়া যায়। এসব তথ্য এবং তথ্য-প্রযুক্তিগত সহায়তায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিহতের স্বামীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়”, বলেন এসপি মোস্তফা কামাল রাশেদ।
“নিহতের স্বামীকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি তার স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন। নিজের শ্যালিকার সঙ্গে আসামির পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের জেরে পরিকল্পনা করে স্ত্রীকে ধারালো বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন তিনি।”
আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।