1. admin@jugernarayanganj.com : jugernaraya nganj nganj : jugernaraya nganj nganj
  2. multicare.net@gmail.com : যুগের নারায়ণগঞ্জ :
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ০৬:০১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পরিচয়ে প্রতারণা, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার ঈদের ছুটিতেও না.গঞ্জ সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের জরুরি পরিসেবা চলমান ঈদের ছুটিতেও না.গঞ্জ বন্দর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের জরুরি পরিসেবা চলমান অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে সাবেক স্ত্রীর বান্ধবী গ্রেফতার বন্দরে সাংবাদিক ইমনের মায়ের ইন্তেকাল, জানাজা সম্পন্ন ফতুল্লায় মাদক কারবারের পাওনা টাকার জন্য যুবক আড়াইহাজারে  জামায়াতে ইসলামীর পথসভায়  বিএনপির হামলা, সংঘর্ষ, আহত-৭ ভোটের অধিকারের জন্য বিএনপির নেতা কর্মীরা জীবন দিয়েছে-মামুন মাহমুদ ‘রূপগঞ্জে মামুন হত্যাকাণ্ডে শামীম ওসমানের দোসররা অপপ্রচার করছে’ সোনারগাঁয়ে প্রাচীন স্থাপত্যকীর্তি কোম্পানিকা সেতু রক্ষার দাবি

ফতুল্লার লালখাঁ এলাকায় কিশোরগ্যাংয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
  • ৫৬ বার পড়া হয়েছে

যুগের নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলাধীন ফতুল্লার লালখাঁয় কিশোর গ্যাং ও মাদক ব্যবসায়ীদের ত্রাসের রাজত্ব চলছে। শিল্প অধ্যুষিত এ জনপদে প্রায় ৫ লাখ মানুষ বসবাস করছেন। এই এলাকার চিহ্নিত কিছু মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাং সদস্যদের কারণে এই পাঁচ লাখ মানুষের জীবনে নেমে এসেছে ত্রাসের অমানিশা।

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার লালখাঁ এলাকাটি যেন এখন আর কোনো বসবাসযোগ্য জনপদ নয়, বরং এক ভয়াল বিভীষিকার নাম। এখানে দিনের আলোতেই রাজত্ব চালাচ্ছে কিশোর গ্যাং ও মাদক কারবারিরা। তথ্যমতে, বেশ কিছু কিশোর গ্যাং সদস্য ও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী প্রকাশ্য দিবালোকে লুটপাট, ছিনতাই, শ্লীলতাহানি ও চাঁদাবাজিতে লিপ্ত রয়েছে।

চিহ্নিত এসব মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাং সদস্যরা হলেন—

রামারবাগ এলাকার ফারুক মাদবরের ছেলে রনি, যিনি রামারবাগ ও স্টেডিয়াম এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।

লালখাঁ এলাকার কুত্তা কামালের ছেলে কুত্তা রনি, যিনি হত্যা, রাহাজানি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি সহ নানা অপকর্মে লিপ্ত।

মৃত শুক্কুর মুন্সীর ছেলে পারুল, যিনি শ্রমিক লীগ নেতা কাউসার আহমেদ পলাশের ক্যাডার এবং এখনো মাদক ব্যবসা, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছেন।

শান্ত ওরফে রোহিঙ্গা শান্তর ছেলে শাওন ওরফে মাফিয়া শাওন, যিনি ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

জনু মিয়ার ছেলে রাতুল ওরফে ক্যাডার রাতুল, যিনি ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও মাদকসেবনে জড়িত।

মৃত ফকির চানের ছেলে সানাল, যুবলীগ ক্যাডার ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু।

পারুলের ছেলে রাকিব, যুবলীগ সন্ত্রাসী, সজলের ক্যাডার ও বিভিন্ন মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত।

ফারুক মাতবরের ছেলে ইয়াবা জাহিদ, যিনি ছিনতাই ও মাদক ব্যবসায় সক্রিয়।

মৃত নুরু মিয়ার ছেলে রোহিঙ্গা শাকিল, যিনি চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসায় জড়িত।

মৃত সুলাইমানের ছেলে সজীব, কুখ্যাত যুবলীগ ক্যাডার, সজলের ডান হাত; মাদক ব্যবসা, ভূমিদস্যুতা ও চাঁদাবাজিতে লিপ্ত।

আনোয়ার মাস্টারের ছেলে ফয়সাল ওরফে পিস্তল ফয়সাল, যিনি ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে পরিচিত।

আওয়ামী লীগ নেতা ইবু মিয়ার ছেলে সাদ্দাম, যুবলীগ সন্ত্রাসী ও ধর্ষণ, খুন-খারাবি, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত।

ইবু মিয়ার আরেক ছেলে সজল, যুবলীগ ক্যাডার, ইয়াবা ব্যবসার ডিলার ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবসায়ী।

এছাড়া, আবুল হোসেনের ছেলে রিঙ্কু, অনলাইন জুয়ার মাফিয়া ডন হিসেবে পরিচিত।

লালখাঁ এলাকার হাজী বাড়ি মোড়, পিটিআই রোড, তক্কার মাঠ, রামারবাগ, স্টেডিয়াম চৌরাস্তা, লালখাঁ খানকা রোড, শেহাচরসহ আশপাশের এলাকায় গড়ে উঠেছে অঘোষিত সন্ত্রাসের সাম্রাজ্য। গরিব শ্রমজীবীদের কষ্টের টাকা অবলীলায় কেড়ে নিচ্ছে তারা। বেতন পেলেই শুরু হয় টার্গেটিং। মোবাইল, নগদ টাকা এমনকি খাবারের ব্যাগও ছিনিয়ে নিচ্ছে কিশোর অপরাধীরা। নারীরা রাস্তায় বের হলেই হচ্ছে শ্লীলতাহানির শিকার—সবই প্রকাশ্য দিবালোকে।

লালখাঁতে রয়েছে অসংখ্য শিল্প-কারখানা। প্রতিদিন হাজারো শ্রমিক এখানে কাজ করতে আসেন। কিন্তু বর্তমানে তাদের কোনো নিরাপত্তা নেই। অনেকেই ছিনতাইয়ের ভয়ে কাজে যেতে ভয় পান। ফলে এই জনবহুল এলাকাটি ব্যবসার জন্য ‘ডেথ জোন’-এ পরিণত হচ্ছে।

বিস্ময়কর হলেও সত্য—এসব অপরাধীর পেছনে রয়েছে একাধিক প্রভাবশালী ‘শেল্টারদাতা’। রাজনৈতিক পরিচয়ধারী কিছু ব্যক্তি ও প্রশাসনের একাংশের ছত্রছায়ায় কিশোর গ্যাং আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। ফলে গ্রেফতার হলেও কিছুক্ষণের মধ্যে ছাড়া পেয়ে আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসে তারা।

স্থানীয় এক নারী বলেন, “আমার ছেলেকে গ্যাংয়ে ভর্তি করার জন্য হুমকি দিচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই বলে—‘দেখে নেব।’”

এলাকাবাসী একবাক্যে বলছেন—“আমরা পুলিশ চাই না, আমরা শান্তি চাই। যে পুলিশ ধরে আবার ছেড়ে দেয়, সেই পুলিশ না থাকলেই ভালো।”

লালখাঁ এখন রীতিমতো বারুদের স্তূপ। প্রশাসন যদি এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এই সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়বে পুরো ফতুল্লা, এমনকি নারায়ণগঞ্জ জেলাজুড়েও।

দ্রুত র‍্যাব-পুলিশের সমন্বিত অভিযান, শেল্টারদাতাদের নাম প্রকাশ ও বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী এখন জেগে উঠেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—প্রশাসন জাগবে কবে?

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট