যুগের নারায়ণগঞ্জ:
শ্রমিকদের পূর্ণ ঈদ বোনাস, সমস্ত বকেয়া ও চলতি মাসের বেতন পরিশোধ এবং শ্রমিক ছাঁটাই, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এ সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক এবং সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লবের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আব্দুল হাই শরীফ, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুর রহমান, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অঞ্জন দাস, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, পোশাক ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র জেলার সভাপতি শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার যুগ্ম সম্পাদক নাছির হোসেন এবং গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি জেলার সভাপতি আব্দুল আল মামুন প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে শ্রমজীবী মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ঈদ সামনে রেখে দরিদ্র শ্রমিকরা পরিবার-পরিজনের জন্য ভালো খাবার ও পোশাক কেনার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু মালিকরা ঈদের আগে বেতন-বোনাস নিয়ে সংকট তৈরি করেন। অনেক মালিক পূর্ণ বোনাস না দিয়ে মাত্র ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা বকশিশ দেন, কেউবা হাফ বোনাস প্রদান করেন, অনেক ক্ষেত্রে সেটাও দেওয়া হয় না। সরকারি প্রতিষ্ঠানে যেখানে বেসিকের সমান বোনাস দেওয়া হয়, সেখানে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ক্ষেত্রে এই ন্যায্যতা বজায় রাখা হয় না।
বক্তারা আরও বলেন, শ্রমিকদের ঈদের আগে অতিরিক্ত কাজ করে আয় বাড়ানোর চেষ্টা করলেও মালিকপক্ষ বেতন-বোনাস নিয়ে টালবাহানা করে। বেতন-বোনাসের বিলম্বের কারণে শ্রমিকরা শেষ মুহূর্তে কেনাকাটা করতে বাধ্য হন, যা তাদের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই ঈদের অন্তত ১০ দিন আগে সমস্ত বকেয়া পরিশোধসহ চলতি মাসের বেতন ও পূর্ণ বোনাস পরিশোধের দাবি জানান তারা।
শ্রমিক নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি মালিকপক্ষ বেতন-বোনাস নিয়ে গড়িমসি করে এবং শ্রমিক অসন্তোষের সৃষ্টি হয়, তাহলে এর দায় মালিক ও প্রশাসনকেই বহন করতে হবে। শ্রমিক অধিকার আদায়ের এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।