যুগের নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জে ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজারের অন্যতম একটি দ্বিগুবাবুর বাজার। পাইকারি-খুচরা প্রায় সব দোকানে সয়াবিন তেল বিক্রি হয় এখানে। কিন্তু সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের সব দোকানে বোতলজাতকৃত ব্রান্ডের তেল উধাও। বাজারের সব দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট। যেসব দোকানে আছে, সেখানেও নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে লিটার প্রতি ৩০ টাকা বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে। একই চিত্র দেখা গেছে, বাজারে থাকা অস্থায়ী দোকানগুলোতে।
পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানি ও ডিলাররা বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে না। সরবরাহ করলেও তা নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি।
তবে কিছু কিছু দোকানিরা আগের কেনা তেলও বোতলে সংযোজিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত বেশি দামে বিক্রি করছেন।
বাজারের সব দোকানে এক ও দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন প্রায় নেই বলা চলে। গুটিকয়েক দোকানে তেল পাওয়া গেলেও দাম চাওয়া হচ্ছে বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি। আবার এসব তেলের গায়ে নির্ধারিত মূল্যও মুছে দেওয়া হচ্ছে।
ক্রেতারা জানিয়েছেন, যেখানে ৫ লিটার বোতলজাত তেল ৮৫০ টাকা হওয়ার কথা, সেখানে দোকানিরা দাম চাইছেন একহাজার বিশ টাকা।
অতিরিক্ত দামে বিক্রি করার পেছনে বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ নেই তাই বাড়িয়ে বিক্রি করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারে তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মী একজন বলছেন, তেল সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে কোম্পানী। তবে যেটুকু সরবরাহ করা হচ্ছে, সেটিও কিছু দোকানি মজুত করে দাম বেশি নিচ্ছেন। ২ লিটার বোতলজাত সয়াবিন বিক্রয়কর্মীরা দিচ্ছেন ৩৩২ টাকা দরে। যেটি বিক্রি করার কথা ৩৫০ টাকায় কিন্তু দোকানিরা নিচ্ছে ৪১০ টাকা করে।
দ্বিগুবাবুর বাজার লিয়াকত সুপার মার্কেটের সততা ভ্যারাইটিজ ষ্টোরের বিক্রেতা বলেন, বাজারে এখন তেল নেই। কয়েকমাস ধরে কোম্পানিগুলো তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।
দ্বিগুবাবুর বাজারের মীর জুমলা সড়ক সংলগ্ন বাবা শাহ্ জালাল ষ্টোরের বিক্রেতা বলেন, বাজারে তেল নেই বেশি দামে বিক্রি করে মানুষকে তেল দিচ্ছি এইটাই বেশি।
নৈশ প্রহরীর চাকরি করা জামাল হোসেন বলেন, দুইদিন পর রমজান মাস সবথেকে বেশি চাহিদা তেলের কিন্তু আজকে বাজারে এসে দেখি দোকানিরা বলছে তেল নেই কিন্তু কোনো দোকানে থাকলেও তা অনেক বেশি দামে বিক্রি করছে।
সর্বশেষ গতকাল বুধবার আসন্ন রমজানের বাজার নিয়ে জেলা টাস্কফোর্স কমিটি’র এক মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক জাহিদুল হক মিঞা বলেন, রমজান মাসে কেউ যদি কৃত্রিম সংকট তৈরি করে, তাহলে তার কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। ব্যবসায়ীদের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে, তারা যেন এ ধরনের অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকেন। কেউ যদি এমন কাজের তথ্য পান, তাহলে প্রশাসনকে জানান।