যুগের নারায়ণগঞ্জ:
দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছিল ফতুল্লার কাঁশিপুর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন সালু এবং হীরা বাহিনী। একের পর এক অপকর্ম করে আসলেও রহস্যজনক কারনে নীরব ছিল দায়িত্বশীল কর্তা ব্যাক্তিরা।
তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এলাকার প্রভাবশালীদের প্রত্যক্ষ শেল্টার থাকায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠে হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি সালাউদ্দিন সালু এবং হীরা বাহিনী। সম্প্রতি, স্থানীয় এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ নেতা সুরুজ মিয়াকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার পর ফের আলোচনায় আসে সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন সালু এবং হীরা বাহিনীর অপকর্ম।
অপরদিকে, পিতাকে বাঁচাতে গিয়ে ধারালো ছোরার আঘাতে গুরুতর আহতবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে নিহত সুরুজ মিয়ার দুই ছেলে রাজু এবং জনি। ইতিমধ্যে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সুরুজ মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় হীরাসহ তার সহযোগীদের আটক করতে সক্ষম হলেও ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সালাউদ্দিন। অবশ্য, জেলা পুলিশ প্রশাসন সালাউদ্দিনকে আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে। অপরদিকে, প্রশ্ন উঠেছে দীর্ঘদিন ধরে একের পর এক অপকর্ম করে বেড়ালেও তাদের শেল্টারে মূলত কারা রয়েছিল? কিংবা কাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে এতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে শীর্ষ সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন সালু এবং হীরা বাহিনী?
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কাৃশিপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড মেম্বার ইমদাদুল হক খোঁকা, কাঁশিপুর ভোলাইল কাউয়াপাড়া এলাকার তরকারী বাদশা এবং পশ্চিম ভোলাইল গেউদ্দার বাজার এলাকার ডিস বদু। অভিযুক্ত শেল্টারদাতাদের এলাকার আধিপত্য বজায় রাখার জন্য সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন সালু এবং হীরা বাহিনীকে ব্যবহার করতেন তারা এমনটাই অভিযোগ উঠে এসেছে। প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের শেল্টার থাকায় দিনের পর দিন বেপরোয়া হয়ে উঠে উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা। আওয়ামীলীগ নেতা সুরুজ মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের শেল্টারদাতা ইউপি সদস্য হীরা ও তরকারী বাদশা এবং ডিস বদুকে গ্রেফতারের দাবি উঠেছে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে। সন্ত্রাসীদের শেল্টারদাতাদের দমন করা হলে এলাকায় শান্তি বজায় থাকবে বলেও এলাকাবাসী মনে করেন।
এ ব্যাপারে কাঁশিপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার ইমদাদুল হক খোঁকা তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয় ৭নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শামীমের ছোট ভাই জামান আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি আওয়ামীলীগ নেতা সুরুজ মিয়া হত্যাকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এমনকি ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করেন তারা। তিনি আরো বলেন, স্থানীয়ভাবে সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন এবং হীরার সকল অপকর্মের প্রতিবাদ আমি করেছি। অথচ আজকে একটি মহল আমাকে নিয়েই ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে।
একই অভিযোগের বিষয়ে ডিস বদুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এলাকার লোক হিসেবে হীরার সাথে আমার পরিচয়। তবে, এ পরিচয় শুধুমাত্র এলাকার ভাই ব্রাদার হিসেবে। আমি সালাউদ্দীন কিংবা হীরাকে কখনই শেল্টার দিতাম না। একটি পক্ষ হয়তো বা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আমাকো ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নূরে আযম বলেন, সন্ত্রাসীদের যারাই আশ্রয় কিংবা প্রশ্রয় দেয় তাদের বিষয়ে আমরা খোঁজ কবর নিচ্ছি এমনকি আওয়ামীলীগ নেতা সুরুজ মিয়া হত্যাকান্ডে যারাই জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।