
যুগের নারায়ণগঞ্জ:
আদালতের নির্দেশে ঢাকা যাত্রাবাড়ি থানায় নারায়ণগঞ্জ-৪ ও ৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের ১৪৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
একই সঙ্গে আরও ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
বাদী ও মামলার বিবরণ
সিদ্ধিরগঞ্জের নিমাইকাশারীর মৃত মজিবর রহমানের স্ত্রী সেলিনা বেগম বাদী হয়ে গত ১৬ নভেম্বর মামলাটি করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। বাদীর অভিযোগে বলা হয়, বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর হামলা–নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড সংঘটনের নির্দেশনা ও পরিচালনায় আসামিরা জড়িত ছিলেন।
কেন্দ্রীয় নেতাদের নাম
মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন—
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল
ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস
সাবেক পুলিশ প্রধান আব্দুল্লাহ আল মামুন
সাবেক ডিবি প্রধান হারুণ অর রশিদ
প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিম
সাবেক এমপি শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান
অয়ন ওসমান ও আজমেরী ওসমান
নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার ১৪৯ নেতা
নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, গোপালগঞ্জ, মাগুরা, মাদারিপুর, নড়াইল, ফেনীসহ অন্তত ১৩ জেলার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামীয় আসামি করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের আসামিদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান, বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গিরিঙ্গি শাহিন, ছাত্র সমাজ নেতা নয়ন সরদার, স্ট্যান্ড রাজু, আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ুন কবির মৃধাসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।
তদন্ত ও প্রতিক্রিয়া
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ি থানার উপপরিদর্শক জাকির হোসেন মামলাটি রুজুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে বাদী সেলিনা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় আসামিপক্ষ বা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এমন উচ্চপর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে একযোগে মামলা দায়ের অভূতপূর্ব। সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দলবদলের পরিবর্তিত চিত্রে এই মামলা নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মামলার প্রক্রিয়া, তদন্তের অগ্রগতি এবং এতে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কি না—তা নিয়েই এখন পর্যবেক্ষণ চলছে।