
যুগের নারায়ণগঞ্জ:
নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় বহুল আলোচিত ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লাখ মিয়ার ভাতিজা নাইমের জামিনে মুক্তির পর রাজনৈতিক মাঠে সক্রিয়তাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনা দেখা দিয়েছে।
ধর্ষণ মামলায় আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এই আসামি জামিনে বের হয়ে বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জামিনে বের হওয়ার পর থেকে নাইমকে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের ছোট ভাই রাকিবের সঙ্গে বিভিন্ন সভা–সমাবেশ ও প্রচারমুখী কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে। এ ঘটনা ঘিরে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
২৫ কোটি টাকার ‘চাঁদা গ্রহণ’-এর অভিযোগ
এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ে লাখ মিয়া পরিবারের কাছ থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্বিঘ্নে পরিচালনার আশ্বাস এবং রাজনৈতিক আশ্রয়–প্রশ্রয় দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নজরুল ইসলাম আজাদ প্রায় ২৫ কোটি টাকা নিয়েছিলেন। তবে এ অভিযোগের বিষয়ে এখনো কোনো পক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেনি।
রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন
নাঈমের মতো একটি গুরুতর মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। রাজনৈতিক দলগুলো দায়িত্বশীলতার খাতিরে এমন ব্যক্তিদের নিয়ে সতর্ক থাকার দাবি জানাচ্ছেন অনেকে।
স্থানীয়রা বলছেন, আদালতের রায়ে দণ্ডিত একজন ব্যক্তির জামিনে মুক্ত হয়ে রাজনৈতিক মঞ্চে সক্রিয় উপস্থিতি আইন ও নৈতিকতার প্রশ্ন তৈরি করেছে। পাশাপাশি এমন ব্যক্তিকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা জনগণের নিরাপত্তা ও আস্থার জন্য নেতিবাচক বার্তা বহন করতে পারে।
আসামি বা রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য মেলেনি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হওয়া ঘটনাটি নিয়ে নাঈম, লাখ মিয়া পরিবার বা সংশ্লিষ্ট বিএনপি নেতাদের কেউই আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি। এতে ঘটনাটির সত্যতা, অভিযোগের পরিমাণ এবং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আরও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
সচেতন মহলের দাবি
সুশাসন ও রাজনৈতিক শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা বিষয়ে স্পষ্ট নীতিমালা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা। তাঁদের মতে, আইনের শাসন ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই ধরনের ঘটনা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।