মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন
যুগের নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী দোসর থেকে এখন বিএনপি ঘনিষ্ঠতায় নাম লিখিয়েছেন আলোচিত মাদকসেবী ও টাউট-বাটপার হিসেবে পরিচিত হাবিবুর রহমান জুম্মন।
একসময় তিনি ছিলেন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এইচটি ইমামের সহযোগী কামরুল হাসানের শ্যালক এবং আওয়ামী প্রভাবশালী মহলভুক্ত মো. মহিউদ্দিন সানীর মেয়ের জামাই।
সাম্প্রতিক সময়ে সরকার পরিবর্তনের পর জুম্মন নিজের রাজনৈতিক রঙ বদলে বিএনপির ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
একসময় আওয়ামী প্রভাবশালী মহিউদ্দিন সানীর আশীর্বাদে গোদনাইল মেঘনা ডিপো থেকে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করেছিলেন জুম্মন।
তার দাপটে এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদকসেবন ও ব্যবসার বিস্তার ঘটেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত সপ্তাহে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ টাউট ও বাটপার হিসেবে পরিচিত হাবিবুর রহমান জুম্মনকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তির বন্যা বইয়ে যায়, এমনকি অনেকে মিষ্টি বিতরণ করে আনন্দ প্রকাশ করেন।
তবে বিস্ময়ের বিষয়, গ্রেপ্তারের পরপরই নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আনোয়ার প্রধান তার আইনজীবী হিসেবে হাজির হয়ে আদালত থেকে জুম্মনের জামিন নিশ্চিত করেন। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জুম্মনের শ্যালক কামরুল হাসান প্রয়াত এইচটি ইমামের প্রতিষ্ঠানের দেখভাল করতেন এবং ভুয়া দলিলপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকার ঋণ গ্রহণে সহায়তা করতেন।
তাদের স্থায়ী বসবাস যশোরে হলেও বর্তমানে তারা নারায়ণগঞ্জের ভূমি পল্লীতে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। জানা গেছে, সেখানে তাদের প্রায় ৩ কোটি টাকার ফ্ল্যাট ও দামি গাড়ি রয়েছে।
দুলাভাই কামরুল ও শ্বশুর মহিউদ্দিন সানীর প্রভাব ও আশ্রয়ে জুম্মন রেললাইনের পাশে একটি অবৈধ মার্কেট গড়ে তুলেছেন।
এছাড়া, মেঘনা ডিপোর আওয়ামী সিন্ডিকেট ইউনিট কমিটিতেও জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি, যেখান থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় ও নানা অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জনের অভিযোগ উঠেছে।
বর্তমানে জুম্মনের বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও ব্যবসাসহ নানাবিধ অপরাধে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ।
স্থানীয়রা জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন জুম্মন ও তার আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
একই সঙ্গে তারা নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জোর আহ্বান জানিয়েছেন যেন এই মাদকচক্রের মূল হোতা ও আশ্রয়দাতাদের আইনের আওতায় আনা হয়।
