যুগের নারায়ণগঞ্জ:
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ঢাকার পাশ্ববর্তী জেলা নারায়নগঞ্জকে অস্থিতিশীল করতে তৎপর হয়ে উঠেছে স্বেরাচারী দোসররা। স্বেরাচারী খেতাব পাওয়া হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ইতিমধ্যে শহরের বিভিন্নস্থানে পোষ্টারিং করে জনমনে ভীতি সঞ্চারের সৃষ্টিসহ জেলার বিভিন্নস্থানে অরাজকতা ঘটিয়ে শান্ত নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করার পায়তারা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দও এমন অভিযোগ তোলে সভা সেমিনারে বক্তব্য দিয়ে আসছেন।
এমনকি কোথাও কোথাও হামলা, ভাঙচুর, লুটপাটের ঘটনাও ঘটছে। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির পক্ষ থেকে জনমনে স্বস্তি ফেরাতে নেতাদের এলাকা ভাগ করে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী এবং দলটির সিনিয়র সহ-সভাপতি রুহুল আমিন সিকদারসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের যেকোনো বিপদে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
এসময় ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। ছাত্রজনতার জীবনের বিনিময়ে স্বৈরশাসকের পতন ঘটেছে। শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানি করা যাবে না। যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হয়েছে তাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে।
বিএনপি নেতা রিয়াদ চৌধুরী আরো বলেন, সাধারন জনগণ যাতে গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করতে পারে সে চেষ্টা আমাদের করতে হবে। সুযোগসন্ধানীরা অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে জনমনে ভীতি সঞ্চারের সৃষ্টি করে আসছে। আমরা সকলের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনার অতীতে যেভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন সেভাবে এখনো পরিচালনা করুন। যদি বিএনপির কোনো নেতাকর্মীও হামলা চালাতে আসে তাদের প্রতিহত করুন। তারেক রহমানের নির্দেশ পুরো দেশকে দখলমুক্ত করতে হবে। বিএনপির এই নেতা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করতে হবে। সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি রুহুল আমিন সিকদার বলেন, যে গণতন্ত্রের জন্য শহীদ জিয়া নিহত হয়েছেন, খালেদা জিয়া বন্দী হয়েছেন, তারেক রহমান দেশান্তরী হয়েছেন, সে গণতন্ত্রকে নসাৎ করা যাবে না। ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করবো চাঁদাবাজদের প্রতিহত করুন। তবে, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেবেন। এসময় বিএনপিতে কোনো দুষ্কৃতকারী এবং লুটেরাদের স্থান নেই বলে দাবি করেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন সিকদার।
জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে বিএনপি জাতীয় সম্পদ ও জনগণের নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বিএনপিতে কোনো দুষ্কৃতকারী এবং লুটেরাদের স্থান নেই। কেউ যদি বিএনপির নাম ব্যবহার করে লুটপাট চালায়, অরাজকতা করে তাহলে তাদের আটকিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের খবর দেবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেবেন।
গিয়াস উদ্দিন আরো বলেন, বিএনপি জনগণের পাশে আছে। জনগণ আপনাদের পাশে আছে, নারায়ণগঞ্জ আপনাদের। আপনাদের অভয় দিয়ে যাচ্ছি, আমরা আপনাদের নিরাপত্তা দেব। পাশাপাশি আপনাদেরও দায়িত্ব আছে, লুটতরাজকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপিসহ তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাধারণ মানুষের মাঝে লোকদের আতঙ্ক দূর করতে সভা সেমিনার চালিয়ে আসছেন।
এমনকি সম্প্রতি, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের শহরের বিভিন্নস্থানে পোষ্টারিংয়ের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।