মােঃ জাহিদ হোসেন: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে নিজের সাড়ে চার বছরের সন্তানকে অপহরণের দায়ে পিতা আব্দুল্লাহ আল এলিনকে গ্রেপ্তার করেছে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের থানাপাড়া এলাকা থেকে শিশুসন্তান রাফিনকে (৫) উদ্ধার করে পুলিশ।
এর আগে সাড়ে চার বছরের সন্তানকে বিরামপুরে নিজের দাদা-দাদির কাছে লুকিয়ে রেখে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে ধোঁকা দেওয়ার অভিযোগে স্বামী আব্দুল্লাহ আল এলিনসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন স্ত্রী বাবলি খাতুন (২৩)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ছয় বছর আগে ঘোড়াঘাট উপজেলার চাটশাল সোনারপাড়া এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে বাবলি খাতুনের সঙ্গে বিরামপুর উপজেলার থানাপাড়া এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ আল এলিনের বিয়ে হয়।
পরে স্ত্রী বাবলি জানতে পারেন, এর আগেও তার স্বামী বিয়ে করেছিলেন। তার একটি সন্তানও আছে। এ নিয়ে প্রায়ই দুজনের কথাকাটাকাটি হতো। পরে তাদের সংসারে ছেলে সন্তান আসে। সন্তান জন্মের পর থেকে তার স্বামী বিভিন্ন সময়ে টাকার জন্য শারীরিক ও অমানুষিক নির্যাতন করতে থাকে বাবলিকে।
নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবলি তার বাবার বাসায় চলে আসে। পরে স্বামী এলিনও শ্বশুরবাড়ি এসে জমি কিনে কিনে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করতে থাকে। কিছুদিন পর থেকে আবারও টাকার জন্য নির্যাতন চালায় এলিন। তাই বাবলি খাতুন সন্তানকে নিয়ে আবারও বাবা বাড়িতে চলে আসেন।
স্বামী এলিন সেখানে গিয়ে প্রায়ই টাকার জন্য হুমকি দিতেন। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শিশু সন্তান রাফিন উঠানে খেলা করার সময় তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সন্তানকে অনেক খুঁজাখুঁজি করে না পেয়ে থানায় অভিযোগ করেন বাবলি খাতুন।
ঘোড়াঘাট থানার ্অফিসার ইনচার্জ ওসি নামজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার সকাল ১০টার দিকে শিশু সন্তানের মা থানায় এসে অভিযোগ করে জানান, উপজেলার চাটশাল সোনারপাড়ায় তার নিজের মায়ের বাসায় অবস্থানকালে সেখান থেকে ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযোগের ভিত্তিতে চলমান এ ঘটনার রহস্য থানা পুলিশ উদ্ঘাটন করে।
অভিযোগ পাওয়ার পর স্বামী আব্দুল্লাহ আল এলিনকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করে, সে তার সন্তানকে বিরামপুরের পৌর শহরে দাদা-দাদির কাছে লুকিয়ে রেখেছে। পরে পুলিশ গিয়ে শিশু রাফিনকে উদ্ধার করে।
সন্তান উদ্ধারের পর স্ত্রী বাবলি খাতুন একটি অপহরণ মামলা দায়ের করলে স্বামী আব্দুল্লাহ আল এলিনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। শিশু রাফিন এখন পুলিশ হেফাজতে আছে।