1. admin@jugernarayanganj.com : jugernaraya nganj nganj : jugernaraya nganj nganj
  2. multicare.net@gmail.com : যুগের নারায়ণগঞ্জ :
বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ১১:৩৪ অপরাহ্ন

ওসমানদের অত্যাচারের প্রভাব আ’লীগের তৃণমূলে 

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৮৫ বার পড়া হয়েছে

যুগের নারায়ণগঞ্জ:
একটা সময় পুরো নারায়ণগঞ্জের নিয়ন্ত্রন ছিল ওসমান পরিবারের হাতে। এমনকি, বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মকান্ড ছিল নাম ওয়াস্তে। আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ ব্যতিত অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ গোলামের ন্যায় নারায়ণগঞ্জে বসবাস করে থাকত হতো। নারায়ণগঞ্জে ওসমান পরিবার তথা আওয়ামীলীগের প্রভাব এতটাই বেশি ছিল যে তাদের অবস্থান নিয়ে কোন দলই টিকে থাকতে পারত না। অথচ, আওয়ামীলীগের সেই ঘাঁটির অস্তিত্ব বীলিন হতে সময়  লেগেছে মাত্র কয়েকঘন্টা। জুলুম অত্যচারের নগরী থেকে মুক্তি পেয়েছে নারায়ণগঞ্জবাসী।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের কোনো নেতাও নেই। আত্মগোপনে চলে গেছেন জেলার সব নেতাসহ সহযোগী সংগঠন ও তৃণমূলের দায়িত্বশীল নেতারা। দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীর বিশ্বাস ছিল আওয়ামী লীগ সভাপতি পরিস্থিতি অনুকূলে নিয়ে আসবেন। এত দ্রুত প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে কেউই তা ভাবতে পারেননি। হতাশায় আচ্ছন্ন কর্মী-সমর্থক ও অনুসারীরা। নিরাপত্তাহীনতাও প্রবলভাবে ঝেঁকে বসেছে তাদের ভেতরে। নেতাদের দিকনির্দেশনা না পাওয়ায় দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করছেন কর্মীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দিকনির্দেশনা পেলে প্রতিরোধ গড়ে তোলার মানসিকতা দেখাচ্ছেন কর্মী-সমর্থকরা। তবে, বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা মনে করেন, ওসমান পরিবার নারায়ণগঞ্জে যে ধরনের বিতর্কিত কর্মকান্ড করে সন্ত্রাসের জনপদ তৈরী করেছিল। আর তাদের পাপের খেসারত দিতে হচ্ছে তাদেরকে।

এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ নীরব থাকায় কর্মী পর্যায়ের অভিব্যক্তি এমন পাওয়া গেছে, নিজেদের রাজনৈতিক এতিম বলে মনে হচ্ছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দু মাস আগেও জেলার নেতাদের নির্দেশে যেসব কর্মী মাঠে সক্রিয় ছিলেন, নির্দেশনার অভাবে অনেকটা অনিশ্চয়তায় পড়েছেন তারা। একই সঙ্গে সামনে আরও হামলার আশঙ্কায় আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর জেলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হয়। অসংখ্য নেতাকর্মী নিহত হওয়ার খবর ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে আতঙ্কে নেতাদের পাশাপাশি কর্মীরাও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

একটি সূত্র জানিয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ নেওয়ার পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বক্তব্য-বিবৃতি দেওয়া হতে পারে। একই সঙ্গে নেতারা গ্রেপ্তার আতঙ্কেও আছেন। দুজন মধ্যম সারির নেতা বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, নতুন সরকার দায়িত্ব নিলে আমাদের আওয়ামী লীগ নেতাদের ধরপাকড় শুরু হবে। এ কারণে অনেকে দেশত্যাগেরও চেষ্টা করছেন। তবে কয়জন যেতে পারেন তা দেখার বিষয়। এদিকে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি গণপিটুনিতে হত্যাকা- অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের পরিচয় জানলেই গণপিটুনির শিকার হতে হচ্ছে। এ ছাড়া বাসাবাড়ি লুটপাটও করা হচ্ছে আওয়ামী লীগের চেনাজানা নেতাদের। বিনা বাধায় ব্যবসা-বাণিজ্য, দোকানপাট ও বাড়ি-গাড়ি ছিনিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে গত কয়েক দিনে। ফলে বেঁচে থাকার তাগিদেই আত্মগোপনে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতারা।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যারা সংকটে আত্মগোপনে চলে যান, কর্মীদের খোঁজ-খবর রাখেন না তাদের নেতা বানানোর পরিণতিই বরণ করতে হয়েছে আজকে। অযোগ্য-অথর্ব নেতাদের পদ দিয়ে, জাতীয় নেতা ও মন্ত্রী বানিয়ে কী লাভ হলো? দল যখন সংকটে আত্মগোপনে থেকে হলেও কর্মী-সমর্থদের দিকনির্দেশনা দেওয়ার মতো সাহস না থাকলে কীভাবে দল চলবে সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। এদিকে নারায়ণগঞ্জের সব নেতাই মোবাইল নাম্বার বন্ধ রেখেছেন, পরিবর্তন করে নতুন নাম্বার নিয়েছেন। নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিয়ে বসে আছেন। দেশত্যাগের সুবিধা খুঁজছেন টাকাওয়ালা নেতারা। কর্মী-সমর্থকের নিরাপত্তার কথা একবারও চিন্তায় আনেননি। নেতাদের দিকনির্দেশনাহীন রেখে গত চার দিনে আওয়ামী লীগের অবস্থা হয়েছে নিষিদ্ধ সংগঠনের মতো। রাজনীতিতে সংকট আসবে পালাতে হবে, আত্মগোপনে থাকতে হবে এগুলো সবই রাজনৈতিক কৌশলের অংশ। কিন্তু কোটি কোটি কর্মী-সমর্থকের জন্য ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা রেখে যাবেন না এটা রাজনীতির কোনো কৌশল হতে পারে না। এদিকে এ পরিস্থিতিতে গা ঢাকা দেওয়া আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ে নেতাকর্মীরা আর্থিক সংকটে পড়তে শুরু করছেন বলে জানা গেছে। তাদের অনেকেই টাকাপয়সার জন্য নেতাদের মোবাইলে খুদে বার্তা দিলেও কোনো উত্তর পাননি। এতে তাদের মধ্যে হতাশা তৈরি হচ্ছে বলে জানা গেছেে।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট