যুগের নারায়ণগঞ্জ:
গত দেড়যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আসিন ছিল স্বেরাচারী হাসিনা সরকার। দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকাকালে মাঠের প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উপর হামলা-মামলাসহ বিভিন্ন নির্যাতনের মাধ্যমে কোনঠাসা করে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। সারা দেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জেও এমন ঘটনা চালিয়ে আসছিল স্বেরাচারী সরকারসহ তাদের দোসররা। তবে, সকল ধরনের হামলা মামলা এবং হুমকিকে উপেক্ষা করে দলীয় রাজনৈতিক কর্মসূচী সফলসহ রাজপথে অবস্থানের মাধ্যমে বিএনপির অস্তিত্বের জাগান দিয়ে আসছিলেন নারায়ণগঞ্জের কিছু তরুন নেতা। দলীয় নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে হামলা মামলার স্বীকার হয়ে বাড়ীঘর ছাড়া হলেও দলীয় আর্দশ থেকে তাদেরকে চূল পরিমানও বিচ্যুতি হতে দেখা যায়নি।

দলীয় ঝান্ডা সমুন্নুত রাখতে নারায়নগঞ্জে বিএনপি এবং তাদের অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের অবদানের কথা স্মরন করতে গেলে যাদের নাম সবার আগে উঠে আসে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আড়াইহাজারের কৃতি সন্তান কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, যুগ্ন আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম ভূইয়া অন্যতম।

দীর্ঘ দেড়যুগেরও বেশি সময় ধরে দলীয় আর্দশকে লালন করে নারায়ণগঞ্জের মাটিতে বিএনপির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাসহ নেতাকর্মীদের মনোবল ধরে রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিলেন তারা। একটা সময় এমন অবস্থা বিরাজ করেছিল যে, স্বেরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলননে নামাতো দূরে থাক কথা বলারও অধিকার হরন করা হয়েছিল! দলের দুঃসময়ে জীবনের মায়া ত্যাগ করে রাজপথে অবস্থানের মাধ্যমে আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে দলের ঝান্ডা সমুন্নিত রাখার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য এমনটা মনে করেন বিএনপির সাধারন নেতাকর্মীরা।

তবে, স্বেরাচারী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের খেসারতও তাদের দিতে হয়ছিল। স্বেরাচারী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে অন্ধত্বের পথে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু। ঢাকা-চিটাগাংরোড মহাসড়কে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে স্বেরাচারী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন তিনি। এসময় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ মিছিলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটুর বাম চোঁখে গুলি করে। এসময় টিটু গুরুতর আহত হয়। বর্তমানে তিনি চিকিৎসা চলমান রয়েছে।

অপরদিকে, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীও দলের দুঃসময়ে নিজের যোগ্যতার প্রমান রেখেছেন। নানা প্রতিকূলতা এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বেরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে তিনসহ তার অন্যতম সহযোদ্ধা বিএনপি নেতা রুহুল আমিন সিকদার একের পর এক আন্দোলনের মাধ্যমে দলের অস্তিত্বের জাগান দিয়ে গেছেন। এক পর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের রোষানালে পড়তে হয় ফতুল্লা থানা বিএনপির কান্ডারী রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে। সাংসদ শামীম ওসমানের নির্দেশে ফতুল্লাসহ জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীসহ বিএনপির রাজনীতি থেকে দূরে সরানোর চেষ্ঠাও করা হয়। কিন্তু দলীয় আর্দশকে বুকে লালন করে দলীয় ঝান্ডা সমুন্নুত রাখতে রাজপথ থেকে পিছু হটেনি আপোষহীন এ নেতা। সর্বশেষ বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে জীবনের মায়া ত্যাগ করে ফতুল্লার রাজপথে বিএনপি নেতা রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর নেতৃত্নে হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে রাজপথে অবস্থান নেন তিনি এবং স্বেরাচারী এ সরকারের পতন ঘটিয়ে রাজপথ ত্যাগ করেন আপোষহীন এ নেতা।

জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ন আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম ভূইয়া। আওয়ামী দুঃশাসনের দীর্ঘ সময় একাধিক মামলার খড়ক মাথায় নিয়ে অধিকাংশ সময়েই তাকে থাকতে হয়েছে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। একদিকে স্বেরাচার আওয়ামী সরকারের নির্যাতন অন্যদিকে দলের প্রতি তার একনিষ্ট ভালবাসা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপোষহীন এ নেতা দলীয় নির্দেশনা পালনে নারায়ণগঞ্জসহ আড়াইহাজারের রাজপথে বিএনপির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গেছেন। এমনকি, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অভিসাংবাদিত এ নেতা নিজ নেতাকর্মীদের নিয়ে স্বেরাচারী হাসিনা সরকার পতনের আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জ যুবদলের পক্ষ থেকে ঢাকার রাজপথে প্রথম সারির নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। স্বেরাচারী হাসিনা সরকারের পুলিশ বাহিনীর গুলিতে মৃত্যুর ভয়কে উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন অভিসাংবাদিত এ নেতা। একপর্যায়ে হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়ে চূড়ান্ত বিজয় নিয়ে বাড়ীতে ফিরেন আপোষহীন এ নেতা।