যুগের নারায়ণগঞ্জ:
নেতাকর্মীদের চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে পালিয়ে গেছেন জেলা আওয়ামীলীগের সুবিধাভোগী নেতৃবৃন্দ। এতে দলের হাজার হাজার কর্মী ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়ে পড়েছেন। শুধু তাই নয়,কঠিন সময়ে আবারও প্রকাশ পেল আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতার করুণ চিত্রও।
টানা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা দলটির তৃণমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীরা ব্যস্ত ছিল নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-কোন্দলে হয়ে পড়েছিল জনবিচ্ছিন্ন। এতদিন পুলিশের ওপর নির্ভরশীল আওয়ামী লীগের কী হতশ্রী অবস্থা-এই সংকটে তা স্পষ্ট হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে প্রভাবশালী দলটির নেতা ও এমপি প্রায় সবাই চলে গেছেন আত্মগোপনে।
এমতাবস্থায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের দলীয় কার্যালয়, বাসা-বাড়ি ও অফিসে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ রোববার ছাত্র-জনতার একদফার বিপক্ষে মাঠে ছিলেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এদিন নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ঘটে বহু হতাহতের ঘটনাও। দিনশেষে কারফিউ ঘোষণা হলে নিজেদের ঘোষিত সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয় দলটি। সর্বশেষ মূলদলসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। তারা আগেও কারফিউর মধ্যেই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অবস্থান নিতে দেখা গেছে। দলনেত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে নেতাকর্মীশূন্য দেখা গেছে পার্টি অফিসগুলো থেকে শুরু করে সর্বত্র। এদিকে, সংকটে আওয়ামী লীগ শক্ত হাতে পরিস্থিত মোকাবিলা করতে পারে না-আরেকবার তা প্রমাণিত হলো। বিশেষ করে এই সংকটে দলটির সভাপতি আঃ হাই এবং সাধারব সম্পাদক আবু হাসনাত বাদলের ভূমিকা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন উঠেছিল আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেই।
সাম্প্রতিক সময়ে দলের কয়েকটি সভায় নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়তে হয় তাদের। একাধিকবার দলীয় কার্যালয়ে তাকে দেখে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেন দলের নেতাকর্মীরা। রোববার তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাওড় হয়েছে-তারাও দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। এদিকে আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বও দিকনির্দেশনাহীন। তারা জানেন না কী করতে হবে। নেতাদের মধ্যে অধিকাংশই হাইব্রিড। তারা এখন নিজেদের বাঁচানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করছেন।
অনেক আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় হামলা করা হয়েছে, বাসা-অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মার খাচ্ছেন। এ পরিস্থিতি থেকে আওয়ামী লীগ কীভাবে সামনে এগোবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হিসাবে দেখা দিয়েছে।