নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে জঙ্গি, মাদক, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে সর্বস্তরের জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে র্যাব।
গত ১৯ এপ্রিল ২০২৩ তারিখ লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ থানাধীন ৩নং ভাদুর ইউনিয়নের রামগঞ্জ -চাটখিল সড়কের হৈইলাকুয়া ব্রীজের নিচে ০১টি কন্যা শিশু ও ০১টি মহিলার লাশ পাওয়া যায়। লাশগুলি উদ্ধার করে প্রাথমিক ভাবে লাশ দুটিকে মা ও মেয়ে হিসেবে ধারনা করা হয়। অনুসন্ধানে জানা যায় গত ২০/০৪/২০২৩ইং তারিখ ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানায় একটি নিখোঁজ ডাইরী করা হয় যেখানে একজন মহিলা ও একজন শিশু কন্যা নিখোঁজ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। পরবর্তীতে নিখোঁজ মহিলার স্বজনেরা এসে নিহত মহিলাকে রওশন আরা বেগম এবং শিশুটিকে তার মেয়ে নুসরাত হিসেবে সনাক্ত করে। এ বিষয়ে রামগঞ্জ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। হত্যা মামলা রুজু হওয়ার পরপরই র্যাব উক্ত ঘটনা সম্পর্কে ছায়াতদন্ত শুরু করে। এ ঘটনার জন্য নিহত রওশন আরা বেগমের স্বামী মোঃ জামাল উদ্দিনকে প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ করা হয়। কিন্তু সে আত্মগোপনে থাকায় তাকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৪/০৫/২০২৩ইং তারিখ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকার শ্যামপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মো: জামাল উদ্দিন (৪১) পিতা- রুহুল আমীন মিজি, মাতা-সালেহা বেগম, গ্রাম:-বহরীগ্রাম, থানা- মতলব দক্ষিন, জেলা-চাঁদপুরকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধান এবং জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, হত্যাকান্ডের স্বীকার রওশন আরা বেগম আসামী জামাল উদ্দিনের ২য় স্ত্রী। ২০১৯ সালে জামাল রওশন আরা কে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে আসামি ঢাকার রায়েরবাগ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে স্ত্রী রওশন আরা বেগম এর সাথে বসবাস করে আসছিলো। পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে জামাল উদ্দিন ও তার স্ত্রীর মাঝে সর্বদা দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকতো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে জামাল উদ্দিনের সাথে তার স্ত্রীর দাম্পত্য কলহ শুরু হলে এক পর্যায়ে জামাল ক্ষিপ্ত হয়ে তার স্ত্রীর গলাটিপে ধরে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। স্ত্রী কে হত্যার পর জামাল তার ঘুমন্ত শিশু কন্যা নুসরাত (১) এর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে। তারপর তার স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে গুম করার উদ্দেশ্যে ঘরে থাকা কাঠের ওয়ারড্রবে ভরে রাখে। পরবর্তীতে আসামী তার পূর্বপরিচিত একটি পিক আপ ভাড়া করে লাশ দুইটি ওয়ারড্রবের ভিতরে রেখেই পিক আপের ড্রাইভার, হেলপার ও জনৈক এক ভাড়াটিয়া ব্যক্তির সহায়তায় সর্বমোট ৪ জন মিলে বাসার জিনিসপত্র নোয়াখালীতে নিয়ে যাবে বলে একটি পিকআপে তোলে। তারপর তার স্ত্রী ও শিশু কন্যার লাশ রাত আনুমানিক ০৩.৩০ ঘটিকার সময় রামগঞ্জ বাজারের পূর্ব পার্শ্বে মহাসড়কে কালভার্টের নিচে ফেলে আত্মগোপনে চলে যায়।