নিজস্ব সংবাদদাতাঃ ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে হাজির করা হয় আসামি মামুনুল হককে। আজ দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে
ধর্ষণ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে হাজির করা হয় আসামি মামুনুল হককে। আজ দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণেছবি: প্রথম আলো
হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় করা ধর্ষণ মামলায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ আরও দুজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের (জেলা জজ) নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে এই সাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
আদালতে সাক্ষ্য দেন সোনারগাঁ থানার তৎকালীন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) এজাজুল হক ও কলাবাগান এলাকার বাড়ির মালিক (যে বাসায় মামুনুল হক কথিত স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন) মোশাররফ হোসেন। এই মামলায় বাদীসহ মোট ৪৩ জন সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ২০ জন আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আজ মামুনুল হকের বিরুদ্ধে পাঁচজন সাক্ষীর আদালতে সাক্ষ্য প্রদানের তারিখ ধার্য ছিল। আদালতে পুলিশের একজন এএসআইসহ দুজন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, আদালত আগামী ৬ জুন সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।
সাক্ষ্য গ্রহণ উপলক্ষে মামুনুল হককে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকাল নয়টার দিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাঁকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি রকিব উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে জানান, আদালতে পুলিশ কর্মকর্তা এজাজুল তাঁর সাক্ষ্যে বলেছেন, খবর পেয়ে রয়েল রিসোর্টে গেলে মামুনুল হকের কথিত স্ত্রী তাঁদের জানান, মামুনুল হক তাঁকে (কথিত স্ত্রী) রিসোর্টে এনে ধর্ষণ করেছেন। আর বাড়ির মালিক মোশাররফ হোসেন আদালতে মামুনুল হক ও তাঁর কথিত স্ত্রীকে ভাড়াটে হিসেবে শনাক্ত করেছেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে সাক্ষীদের জবানবন্দির সঙ্গে জেরায় পাওয়া তথ্যের অনেক গরমিল পাওয়া গেছে।
২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে একটি রুমে কথিত স্ত্রীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় হেফাজত ও মাদ্রাসার ছাত্ররা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে মামুনুল ও তাঁর কথিত স্ত্রীকে ছিনিয়ে নেন। ওই ঘটনার ১৫ দিন পর মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ।
রয়েল রিসোর্ট–কাণ্ডের ২৭ দিন পর ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে ওই নারী বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। একই বছরের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের আদালত ধর্ষণের মামলায় অভিযোগ গঠন করেন