নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় সহোদর রাজন-সুমন-মোহনের অপকর্ম কোনোভাবেই থামছে না। শাহজাহান রি-রোলিং সংলগ্ন বায়তুন নাজাত জামে মসজিদের পাশেই অপ্রতিরোধ্য গতিতে তারা চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ও জুয়ার কারবার।
এমনকি প্রশাসন ও সাংবাদিকদের চোখ ফাঁকি দিতে মাদক ও জুয়ার স্পট সংলগ্ন চারপাশের রাস্তায় রীতিমতো পাহারা বসিয়ে অবৈধ ওই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
সরেজমিনে জানা যায়, ফতুল্লার শাহোজাহান রি-রোলিং মিলস সংলগ্ন এলাকার অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ করছে ওই তিন ভাই। এলাকায় মাদক-জুয়া ছাড়াও ছিনতাই, রাহাজানি, চুরির সাথেও তারা জড়িত। উঠতি বয়সের কিশোরদের নিয়ে ওই তিন সন্ত্রাসী গড়ে তুলেছে কিশোর গ্যাং। তাদের মাধ্যমে এলাকায় অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেতারা। তাদের ভয়ে এলাকাবাসীও মুখ খুলতে নারাজ। স্থানীয় এক অধিবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রাজন-সুমন-মোহন সরকারদলীয় লোকের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে। এলাকায় নিজেদের কখনও শ্রমিক লীগ নেতা, কখনও যুবলীগ নেতা পরিচয় দেয়, অথচ দলের ইউনিট কমিটিতেও তাদের কোনো পদ নেই।
একাধিক সূত্রমতে, ২০২১ সালের মে মাসে জুয়ার স্পট থেকে মাদকাসক্ত অবস্থায় গ্রেফতার হয় রাজন-সুমন। এ নিয়ে স্থানীয় পত্রপত্রিকায় ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
তবে গ্রেফতারের কিছুদিন পরেই জামিনে বের হয়ে এসে পূর্বের চেয়ে অপকর্মের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়, এলাকায় কায়েম করে রামরাজত্ব। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তারা সকল অপকর্ম চালায় বলে এলাকায় প্রচার করে বেড়ায়।
সূত্র জানায়, রাজন-সুমন-মোহনের জুয়া ও মাদকের স্পট পাহারা দিতে নিয়োজিত আছে বেতনভুক্ত বেশ কয়েকজন কর্মচারী। প্রশাসন বা গণমাধ্যমের কেউ অথবা সন্দেহভাজন কেউ স্পটের দিকে যেতে চাইলেই সাথে সাথেই তাদের কাছে খবর পৌঁছে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল ইসলাম বলেন, এই অঞ্চলটি ব্যাপক ঘনবসতিপূর্ণ। বেশকিছু শিল্পকারখানার অবস্থান এখানেই ৷এছাড়াও বিসিক শিল্প এলাকাসহ অনেক গার্মেন্ট, মিল-ফ্যাক্টরির শ্রমিকেরা এই অঞ্চলে বাস করেন ৷এছাড়া এলাকার কিশোর-উঠতি তরুণ ও যুবকেরা রাজন-সুমন- মোহনের জুয়ার স্পট ও মাদকের খপ্পড়ে পড়ে জীবনকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এসব অবৈধ ব্যবসার কারণে এলাকার পরিবেশও বসবাসের অযোগ্য ৷ সন্ধ্যার পরে তো দূরের কথা, দিনের বেলাতেও রাস্তায় নারীদের চলাচল নিরাপদ নয়। তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী ইভটিজিং, চুরি, ছিনতাইয়ের সাথেও জড়িত।
এলাকাবাসী অবিলম্বে ওই তিন সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও জুয়ার কারবারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নিকট জোর দাবি জানান ৷