২০২১ সালের ডিসেম্বরে নাসিক নির্বাচনে সক্রিয় ভুমিকা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের দিক নির্দেশনা না মানার কারণে নির্বাচনের দিনই নারায়ণগঞ্জ মাহানগর ও জেলা সহ আড়াইহাজার উপজেলা ব্যাতিত স্বেচ্ছাসেবক লীগের সকল কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।
এর পরপরই জেলার সকল সাংগঠনিক ইউনিট ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ৬জন সহ-সভাপতির নেতৃত্বে ৬টি টিম গঠন করে কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সকল ওয়ার্ড এবং বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন, সদর ও বন্দর থানার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য উপজেলায় সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর জেলা আহবায়ক কমিটির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া খোকন ও সোনারগাঁ উপজেলার ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহামান মাসুম জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্ব পাওয়ার জন্য নতুন উদ্যমে মাঠে নেমেছেন। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সকল কর্মসূচীতে ২জনই বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে সরব উপস্থিতি জানান দিয়ে অদ্য পর্যন্ত দলীয় কর্মকান্ডে নিয়োজিত আছেন। অপরদিকে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদ পেতে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সদস্য কায়কোবাদ রুবেল ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হাজী শফিকুল ইসলাম সক্রিয় ভুমিকায় রয়েছে। এদিকে হটাৎ করেই ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছগির আহমেদ ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিতর্কিত সদস্য রনি মাহমুদ নিজেদেরকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদ প্রত্যাশী ঘোষণা দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দৌড় ঝাঁপ করছেন। পাশাপাশী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন ও বিতর্কিত সাধারণ সম্পাদক দুলাল প্রধানও মহানগরের হারানো পদে ফিরে আসতে মাঠে নেমেছেন। স্থানীয়ভাবে জানা গেছে- রনি মাহমুদ ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগ করতেন। তবে কোন পদ পদবীতে ছিলেন না। তিনি সাবেক জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক নিজাম উদ্দিন’র হাত ধরে জেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য হন। তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দেন যে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের দলে প্রাধান্য দেয়া হবে।
পাশাপাশী কোন মাদক সেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের এদলে কোন পদ পদবী দেয়া হবেনা। এ ঘোষণার পরপরই রনি মাহমুদ ভিপি জামির হোসেন রনি নামে একটি ফেইসবুক আইডি খুলে তা থেকে বিভিন্ন জায়গায় নিজেকে ভিপি পরিচয় দেয়া নিয়ে এবং রনি মাহমুদ’র বিরুদ্ধে মাদক সেবনের নানান অভিযোগ পেয়ে নিজাম উদ্দিন আহমেদ তাকে সংগঠনের সকল কর্মকান্ড থেকে তাকে দূরে রাখেন। পাশাপাশি কোথাও সংগঠনের পরিচয় দিতে নিষেধ করেন। স্থানীয়ভাবে সূত্রে জানা গেছে- রনি মাহমুদ নিজেকে নারায়ণগঞ্জ কলেজের ভিপি পরিচয় দিয়ে বেড়ালেও তিনি সে পদে কখনো ছিলেন না বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এমন কি তিনি ছাত্রলীগের কোন স্থানে কোন পদ পদবিতেও ছিলেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রনি মাহমুদ’র এক বন্ধু জানান, রনি মাহমুদ’র ব্যানার ফেস্টুন লাগাবারও কোন কর্মী নেই।
তার অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেকে দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার ও ফেস্টুন লাগান। কেন্দ্রীয় বিভিন্ন নেতাদের সাথে ছবি তুলে সেই ছবি দেখিয়ে জেলার বিভিন্ন ইউনিটের বিভিন্ন বিতর্কিত ব্যক্তিদের দলীয় পদ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে সুযোগ সুবিধাদী গ্রহণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি নিজেকে নাসিক মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভি’র ঘনিষ্ঠজন বলেও পরিচয় দিয়ে থাকেন। ছগির আহমেদ দুই যুগ পূর্বে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। সভাপতির পদ চলে যাওয়ার পর এই দুই যুগ তিনি দলীয় কোন কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন না। দলিয় কোন মিছিল মিটিংয়েও তাকে দেখা যায়নি। তার জন্মভূমি সোনারগাঁয়েও নেই তার কোন কর্মী। তিনি নিজেকে এমপি শামিম ওসমান’র লোক হিসেবে জাহির করার জন্য তার ফেইসবুক আইডিতে নানা ধরনের প্রচার করেন। তিনি বলে প্রায়শই বলে বেড়ান ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হওয়ার কারণে তার অনেক সহযোগী ও শুভাকাঙ্ক্ষী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন বলে তিনিও জেলার বিভিন্ন ইউনিটে নেতা বানিয়ে দিবে বলে অনেকের কাছ থেকে সুবিধা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। রনি মাহমুদ ও ছগির আহমেদ ২জন দুই মেরুর আশীর্বাদ পুষ্ট দাবী করলেও বর্তমানে তারা একত্রিত হয়ে দলে বিতর্কিত ব্যক্তিদের পদ দেয়ার মিশনে নেমেছেন।
তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া নারায়ণগঞ্জ সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে সদর থানা বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক নজরুল ইসলাম’র আপন ছোট ভাই শফিউল বশার বাবুকে সভাপতি পদে ও পুলিশের উপর বোমা হামলার ২নং আসামী ইকবাল মেম্বারের সহযোগী রবিকে সাধারণ সম্পাদক বানাতে বাবু ও রবির নিকট থেকে সুবিধা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি সোনারগাঁও উপজেলাতে এ ২জন একত্রিত হয়ে বিতর্কিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে পদ পাইয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। নারায়ণগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক লীগের নিবেদিত প্রান দূর্দিনের কান্ডারী, তৃনমূল কর্মীদের দাবী এই বিতর্কিত দুই ব্যক্তিকে কোন ভাবেই যেন দলের পদ দেয়া না হয়। এরা পদ পেলে স্বেচ্ছাসেবক লীগের দীর্ঘ দিনের সুনাম বিনষ্ট অনিবার্য।