
যুগের নারায়ণগঞ্জ:
দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার প্রায় ১১ মাস পর দলে ডাক পেয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। এর ফলে ইকবাল অনুসারীদের মধ্যে কাজ করছে উচ্ছ্বাস। তবে এখনো ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়া ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী। নির্বাচনের আগেই তিনিও দলে ডাক পেতে পারেন এমনটাই জানা গেছে একাধিক সূত্রে। এর আগে বিগত আওয়ামী লীগের সময় বিএনপিতে এই দুই নেতার অবদান ছিল অনস্বীকার্য। যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামে তারা সামনে থেকে দল পরিচালনা করেছেন, নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন। তবে ৫ই আগস্টের পর নিজ দলীয় কিছু নেতার ষড়যন্ত্রের স্বীকারসহ স্বার্থন্বেষী একটি মহলের ষড়যন্ত্রের কারনে বিতর্কিত কর্মকান্ডের অভিযোগ এনে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব ধরণের পদ থেকে বহিষ্কৃত হতে হয় তাদের। এরপর থেকে তারা বিএনপির রাজনীতিতে না থাকতে পারলেও সামাজিক কর্মকান্ডে নিজেদের নিয়োজিত রাখেন। পাশাপাশি দলের সিদ্ধান্তের উপরই ভরসা রাখতে থাকেন। তাদের বিশ্বাস ছিল, দলে ফের ডাক পাবেন তারা। অবশেষে গত ১৩ নভেম্বর সাবেক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেনের বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হয়। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতে, এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে ইকবাল হোসেনের। পাশাপাশি অন্যান্য নেতাকর্মীদেরও এ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে। দলের চেয়ে কেউ বড় নন।
এদিকে এই দুই নেতারই থানা বিএনপিতে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা ও অনুসারী ছিল। যেকোনো কর্মসূচিতে তাদের শোডাউন ছিল চোখে দেখার মতোন। সিদ্ধিরগঞ্জে কোনো কর্মসূচি থাকলেও ইকবাল হোসেনের অনুসারী না উপস্থিত হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচিস্থল জমতো না। তার অনুপস্থিতে একা হয়ে গেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম। বর্তমানে তার একা দল পরিচালনা করতে কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। একই দশা ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভুঁইয়ারও।
রিয়াদ চৌধুরীর কারণে অর্থনৈতিক ও জনবল সবদিক দিয়েই শক্তিশালী ছিল ফতুল্লা থানা বিএনপি। রিয়াদ চৌধুরীর বদৌলতে ফতুল্লায় একের পর এক বিশাল কর্মসূচি পালিত হতো।
জানা যায়, গত ১৫ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রিয়াদ চৌধুরীকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়। তবে রিয়াদ চৌধুরীর অনুসারীদের ভাষ্য, তিনি আবারও বিএনপির রাজনীতির মাঠে কামব্যাক করবেন। তার বিরুদ্ধে একটি গ্রুপ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তার জনপ্রিয়তা ঈর্ষান্বিত হয়ে অনেকেই তার শত্রুতে পরিণত হয়েছে। তিনি ছাত্রদল করে বিএনপির এই গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আসেন। তিনি কর্মীদের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ। দলের প্রতি তার মতোন এমন দায়িত্বশীল ব্যক্তি পাওয়া দুষ্কর। তাকে ষড়যন্ত্র করে দল থেকে মাইনাস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। গত ১৫ মে সকালে থাইল্যান্ড যাওয়ার পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে আটক করা হয়। এরপর সারাদিন তাকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়। তার আগে গত দুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘চাঁদা না দিলে ফ্যাক্টরি পুড়িয়ে দেওয়া হবে’ রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর এ সংক্রান্ত একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। পরে তার বিরুদ্ধে দুটি চাঁদাবাজি মামলা হয়। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত রয়েছেন। আর গত ১৩ ডিসেম্বর দুপুর ১২ টায় সিদ্ধিরগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সানারপাড় এলাকায় বাসচালক ও যাত্রীকে মারধর করে গাড়ি ভাঙ্গচুর করে বহিষ্কার হোন ইকবাল হোসেন।