যুগের নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র দুই নাম্বার গেট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে চলছে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবসা। স্থানীয়ভাবে পরিচিত এই অবৈধ সিন্ডিকেটের হোতা বাবুল।
প্রায় কয়েক যুগ ধরে এই নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবসা চালিয়ে বাবুল এখন কোটি টাকার মালিক। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাবুলের প্রভাব এতটাই ব্যাপক যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সংস্থাই তার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সাহস পায় না।
আজ মঙ্গলবার ১৪ অক্টোবর ছাড়াও গত ১৩ অক্টোবর সোমবার, গত গত ১১ অক্টোবর শনিবার এবং গত ১০ অক্টোবর শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের ২ নং রেল গেইট এলাকায় এবং রহমতুল্লাহ ইন্সটিটিউটের সামনে একেবারে প্রকাশ্যেই বাবুল তার নিজ দোকানে বসেই কন্টেইনার ভর্তি নিষিদ্ধ পলিথিন গুদামজাত করে।
প্রকাশ্যে এমন নিষিদ্ধ পলিথিন এবং দানার বস্তা গুদামঘরে রাখলেও কেউ টুশব্দ করার সাহস করে না।
এমন ঘটনায় একাধিক সূত্র জানায়, বাবুল নিয়মিত মাসোহারা প্রদান করে কাস্টমস, গোয়েন্দা সংস্থা ও অন্যান্য প্রশাসনিক দপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। ফলে প্রকাশ্যে কন্টেইনারভর্তি নিষিদ্ধ পলিথিন দানা নারায়ণগঞ্জে আনলেও কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয় না।
তার নিষিদ্ধ এমন ব্যবসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ম্যানেজ থাকায় বাবুল নারী কেলেংকারীসহ নানা অপরাধের সাথে যুক্ত থাকলেও তার টিকিটিও স্পর্শ করে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোন সংস্থা।
জানা গেছে, সম্প্রতি প্রায় প্রতিদিনই বাবুলের নিয়ন্ত্রণাধীন চক্র বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে রাজধানী ও নারায়ণগঞ্জে নিষিদ্ধ পলিথিন দানা আমদানি করছে। পরে সেই দানা থেকে তৈরি হচ্ছে ব্যাগ, মোড়ক ও বিভিন্ন পলিথিন পণ্য—যা শহরজুড়ে অবাধে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে এই সিন্ডিকেটকে পুঁজি জোগাচ্ছে রাজধানীর পাইকারি ব্যবসায়ী সোহেল। বাবুলের সঙ্গে তার রয়েছে দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক। তারা যৌথভাবে বিভিন্ন আমদানিকারকের নামে কাগজপত্র সাজিয়ে নিষিদ্ধ পলিথিন দানা আমদানি করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশ না করার একজন বন্ডের নিষিদ্ধ পলিথিনের দানা ব্যবসায়ী বলেন, বাবুল ও তার সিন্ডিকেট যে পরিমাণ কন্টেইনার ভর্তি করে নারায়ণগঞ্জ জেলায় দানা ও পলিথিন গুদামজাত করেন তাতে কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেন। আর ওই রাজস্ব ফাঁকির টাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় সকল সংস্থার অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ, নব্য রাজনীতিবিদ নামধারীদের বিশাল মাসোয়ারাসহ স্থানীয় কিছু বিশেষ পেশার অসাধু কয়েকজনকে ম্যানেজ করেই রমরমা বাণিজ্য করে যাচ্ছে বাবুল ও সোহেল সিন্ডিকেট।
পরিবেশ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি কারণ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির আশ্রয়ে এসব কারবার টিকে আছে।”
স্থানীয় সচেতন মহল দাবি করেছে, পরিবেশ ও জনস্বার্থের ক্ষতি রোধে দ্রুত বাবুল ও তার পলিথিন সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
সম্পাদক : রনি কুমার দাস, প্রকাশক : মোঃ আল আমিন মিয়া রকি কর্তৃক প্রকাশিত
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয় : পশ্চিম ভোলাইল মেলিটিরী বাড়ি কাশীপুর ফতুল্লা নারায়ণগঞ্জ।
যোগাযোগ : ০১৫১১-৭০৫৩৮৪, ০১৯১৬-১৮৭২৫৪.
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত