যুগের নারায়ণগঞ্জ:
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
এসময় প্রধান অতিথি বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আমরা অনেক মেধাবী দেখি, কিন্তু মেধাবী দেশ প্রেমিক নেই। তারাই দেশ প্রেমিক যারা একাত্তরে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ও ২৪ সালে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে রক্ত দিয়েছে। আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
তিনি আরও বলেন, শহীদ আবরার ফাহাদ যে দেশপ্রেম বুকে লালন ও ধারণ করেছে, আমরা তাকে মেরে ফেলতে পারি কিন্তু তার জীবনীকে না। তার দেশের প্রতি ভালোবাসা ও আধিপত্যবাদীর বিরুদ্ধে লড়াই সেটি আমরা মেরে ফেলতে পারিনি। আমাদের এক আবরার ফাহাদ জীবন দিয়েছে, আজকে আমাদের মাঝে শতশত আবরার ফাহাদ সৃষ্টি হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগামী বিশ্ব ব্যবস্থায় আমাদের দেশেকে যদি বিশ্বের নেতৃত্বের আসনে বসাতে চাই, তাহলে আমাদের মেধা দিয়ে যুদ্ধ করতে হবে এবং সেটি হবে দেশপ্রেমে পরিপূর্ণ। আমরা সেই দেশপ্রেমে পরিপূর্ণ সন্তান ও শিক্ষার্থী চাই। যারা নিজের স্বার্থের চোখ বন্ধ করে সবার স্বার্থ ও দেশের স্বার্থ দেখবে। আমাদের মধ্যে যদি সেই সত্যিকারের দেশপ্রেম থাকে তাহলে আবরার ফাহাদ যে কারণে জীবন দিয়ে শহীদ হয়েছে, তার এই আত্মত্যাগ স্বার্থক ও সফল হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রসিকিউশন) মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, তার যোগাযোগ মাধ্যমে যে পোস্টটি করেছিল সেটি আমি দেখেছি, শহীদ আবরার ফাহাদ নিজের বা পরিবারের স্বার্থ নিয়ে কোন কথা বলেনি। সে বলেছিল দেশ ও দেশের মানুষের মর্যাদার কথা। ২১ বছরের একজন মেধাবী শিক্ষার্থী দেশের স্বার্থ নিয়ে কথা বলেছে, সেজন্য তাকে আঘাত করার মতো কোনো কারণ দেখি না। শহীদ আবরার যে মনোভাব ও ইচ্ছা মনে পোষণ করেছিল আমরাও সেটি ধারণ করব।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, শাসক ও শোষকের বিরুদ্ধে যখন দাঁড়িয়ে মেজর জলিল, জহির রায়হান, জিয়াউর রহমান ও সর্বশেষ শহীদ আবরার কথা বলেছেন তখন সেও শহীদ হয়েছেন। আবরার ফাহাদ আমাদের শিখিয়ে গেছেন যে, শুধু মুখে মুখে আধিপত্যদের বিরুদ্ধে কথা বললে হবে না।
ফ্যাসিস্ট সরকার শুধু আবরার ফাহাদকে নয়, অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন মহানগর জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা মাঈনুদ্দিন আহমাদ।
এছাড়াও সভায় বক্তারা আবরার ফাহাদ হত্যার দ্রুত বিচার কর্যক্রমের দাবি জানায়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাখাওয়াত হোসেন, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা ফারজানা, জেলা কালচারাল অফিসার শরমীন জাহান। নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মনোয়ার হোসেন, ইসলামী আন্দোলন মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলার সাবেক আহ্বায়ক নিরব রায়হান, সদস্য সচিব জাবেদ আলম, মহানগরের আহ্বায়ক মাহফুজ খান, মহানগরীর ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক অমিত হাসান, জেলা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি সাইদুর রহমান প্রমুখ।
সম্পাদক : রনি কুমার দাস, প্রকাশক : মোঃ আল আমিন মিয়া রকি কর্তৃক প্রকাশিত
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয় : পশ্চিম ভোলাইল মেলিটিরী বাড়ি কাশীপুর ফতুল্লা নারায়ণগঞ্জ।
যোগাযোগ : ০১৫১১-৭০৫৩৮৪, ০১৯১৬-১৮৭২৫৪.
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত