যুগের নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেছেন, “আমরা নোংরামি ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে চাই না। কিন্তু কেউ কেউ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করছে। আপনারা মাঠে তদন্ত করে ওই সমস্ত লোকদের শাস্তির আওতায় আনেন। আমিও যদি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করি আমিও শাস্তির আওতায় আসবো। সমস্ত জাতীয়তাবাদী দলের নেতাবৃন্দের কাছে অনুরোধ করবো কোনভাবেই আপনারা বাকবিতণ্ডায় জড়াবেন না। সময় ও আপনার কর্ম দিয়ে জবাব দিবেন।”
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বন্দর উপজেলার মুছাপুরের প্রেমতলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে এক শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি স্থানীয় পূজাম-পগুলোতে আর্থিক অনুদানও প্রদান করেন তিনি।
‘নারায়ণগঞ্জের বন্দর সবসময় সম্প্রীতির জায়গা’ উল্লেখ করে মাসুদুজ্জামান আরও বলেন, “শত শত বছর ধরে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই মিলেমিশে বসবাস করে আসছে। দুর্গাপূজা শুধু হিন্দুদের উৎসব নয়, এটি আমাদের সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক।”
তিনি আরও বলেন, “যারা মানুষকে নিয়ে নোংরামি রাজনীতি করে আমরা সে দলে নাই। সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই- এটা জাতীয়বাদী দল বিশ্বাস করে। ভোটের রাজনীতিতে সবাই বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ব্যবহার করেছে। আর ব্যবহৃত হতে চাই না। আমরা চাই ধর্ম যার যার বাংলাদেশ আমার।”
“একটি দল চলে গেছে আরেকটি দল ধর্মের লেবাস পরে ঘাপটি মেরে বসে আছে, মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। শহীদ জিয়াউর রহমান এই দলকে রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছিল। সম্প্রীতি আমাদের রক্তের। আমি ছোটবেলা থেকেই আপনাদের পাশে ছিলাম এবং বিপদ-আপদে সবসময় পাশে থাকবো।”
তিনি বলেন, “জাতীয়তাবাদী দলের সমস্ত সংগঠনের সবাই উৎসবমুখর পরিবেশে সনাতনী ভাই-বোনদের পাশে থেকে পূজা উদযাপন করবেন এবং সাবধান থাকবেন কেউ যাতে ষড়যন্ত্রের শিকার না হয়। সনাতনী ভাই-বোনদের পাশে থেকে পাহাড়া দিবেন।”
মাসুদুজ্জামান বলেন, “আমরা মুছাপুর ইউনিয়নের ভাই-বোনদের সবসময় পাশে থাকবো। আমি আপনাদের অন্তরে জায়গা চাই। আমার যতটুকু সামর্থ্য আছে তা নিয়ে আপনাদের পাশে থাকবো। আমার গর্ব আমার কাছে বড়, আপনার গর্ব আপনার কাছে বড়। জাতি আমরা একটা, সেটা বাংলাদেশী। আমাদের নিয়ে কেউ যাতে রাজনীতি না করতে পারে।”
“একটা দল আপনাদের নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে। দল আমাকে যোগ্য মনে করলে আমি নির্বাচন করবো, আর না হলে আরেকজনের পাশে গিয়ে দাড়াবো। বিভেদ করার কোনো সুযোগ নাই, বিভেদ করা ঠিক হবে না। পিআর পদ্ধতি নিয়ে একটা ষড়যন্ত্র করছে একটি দল। তার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যের কোনো বিকল্প নাই”, যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “কেউ কেউ রাজনীতিকে পেশা হিসেবে নিয়েছে। আমি রাজনীতিকে পেশা হিসেবে নিবো না। রাজনীতি হবে আদর্শের, মানুষের পাশে থাকার, মানুষের জন্য কাজ করার। আমরা সমস্ত কিছু ভুলে আপনাদের পাশে থাকতে চাই।”
“আপনাদের সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। ইনশাল্লাহ আপনারা যদি আমাকে আপনাদের মনে জায়গা দেন তাহলে বিএনপির ঘাঁটি করে দিব এখানে। ইনশাল্লাহ মুছাপুরে বিএনপির ঘাঁটি হবে।”
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কেন্দ্রীয় যুবদলের ভাইস প্রেসিডেন্ট গোলাম মোস্তফা সাগর, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু, অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি অভয় কুমার রায় এবং বাংলাদেশ পূজা ফ্রন্টের সদস্যসচিব কার্তিক ঘোষ, গোপিনাথ জিউর আখড়া পরিচালনা কমিটির সভাপতি ভবানী শংকর রায়।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য হাজী ফারুক হোসেন, মাহবুবু উল্লাহ তপন, মনোয়ার হোসেন শোখন, মো. আলমগীর হোসেন, শহীদুল ইসলাম রিপন, ফারুক আহমেদ রিপন, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু, সাখাওয়াত ইসলাম রানা, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, বন্দর উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহীম খান এবং মহিলা দলের নেত্রীবৃন্দ নুরুন্নাহার, শাজেদা খাতুন, লিপি খন্দকার, রোজিনা মেম্বার ও নাজমা বেগম প্রমুখ।