যুগের নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জ-৫(বন্দর-সদর) আসন কেন্দ্রীক রাজনীতিতে বর্তমানে সবার আগে আলোচনায় মডেল গ্রুপের মালিক শিল্পপতি মাসুদুজ্জামান মাসুদ। গত ২২ সেপ্টেম্বর বিএনপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার যোগদানের পর ধাক্কা লেগেছে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর রাজনীতিতে। সাখাওয়াত ও টিপুর অনুগামীরা দুই দিন যাবত মডেল মাসুদের বলয়ে যোগাযোগ শুরু করে দিয়ে সেখানে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন। রাজকীয়ভাবে বিএনপিতে মডেল মাসুদের যোগদানের বিষয়টিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মাসুদকে মনোনিত করার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা। এবার সাখাওয়াত ও টিপুর মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির দিকে নজর দিয়েছেন মডেল মাসুদ। মডেল মাসুদের হাতেই বেজেছে সাখাওয়াত ও টিপুর বিদায় ঘন্টা।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি কমিটির নেতৃত্বে থাকা আহ্বায়ক সাখাওয়াত ও সদস্য সচিব টিপু। দীর্ঘদিন যাবত মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিলের দাবি ওঠলেও টনক নড়ছেনা কেন্দ্রীয় বিএনপির। কমিটি গঠনের পর থেকে আজোবধি মহানগর বিএনপির কমিটি ও এর আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিট কমিটির নেতারা নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছেন। বিশেষ করে গত ৫ আগস্টের পর মহানগর বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেছেন, যাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা মহানগর বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা। উল্টো সাখাওয়াত ও টিপু নিজেরাই দখলবাজি চাঁদাবাজি মামলা বানিজ্য সহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন।
সূত্রমতে, ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সাখাওয়াত ও টিপুর নেতৃত্বে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। কমিটির ঘোষণার বেশকজন যুগ্ম আহ্বায়কসহ প্রায় অর্ধেক নেতাকর্মী সাখাওয়াত টিপুর বিরোধীতা করে মুলধারার বাহিরে চলে যান। ইতিমধ্যে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এমএইচ মামুন, সদস্য মাহাবুবুর রহমান মৃত্যুবরণ করেছেন। যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান মুুকুল, সদস্য শওকত হাসেম শকু, সুলতান মাহামুদ ভুঁইয়া, গোলাম নবী মুরাদকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন সহ আরো ৪ জন যুগ্ম আহ্বায়ক মিলে মহানগরীর প্রতিটি থানা/উপজেলা, ওয়ার্ডে, ইউনিয়নে বিএনপির পাল্টাপাল্টি কমিটি ঘোষণা করেছেন।
বর্তমানে সাখাওয়াত ও টিপুর পাশে অধিকাংশ যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্যরা নেই। তাদের সমর্থনে দশজন সদস্যও নেই এখন। এই কমিটির যুগ্ম আহ্বায়করা সহ সদস্যরাও চান মহানগর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হোক। সাখাওয়াত ও টিপুর প্রতি অনেক আগেই অনাস্থা জানিয়েছেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সরকার হুমায়ুন কবির, আব্দুস সবুর খান সেন্টু, আবুল কাউসার আশা, হাজী নূরউদ্দীন আহমেদ, বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান মুকুল সহ অন্যান্য সদস্যরা।
অন্যদিকে মডেল মাসুদ বিএনপিতে যোগদানের পর নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা করছেন মাসুদ অনুগামীরা। তাদের মাঝে আলোচনায় ওঠে এসেছে বিগত সময়ে যারা সাখাওয়াত ও টিপুর ষড়যন্ত্রে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন সেইসব নেতাদের বিএনপিতে ফিরিয়ে এনে বিএনপির নেতৃত্ব তুলে দিতে চান। যাদের মধ্যে আহ্বায়ক পদে আলোচনায় আছেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, সাধারণ সম্পাদক পদে মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত হাশেম শকু, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু, শাহ ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন। এরি মাঝে সাখাওয়াতকে পল্টি দিয়ে মডেল মাসুদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন টিপু।