যুগের নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জে পৃথক ঘটনায় একদিনে নারী ও শিশুসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার (ইজিবাইক) ধাক্কা এবং পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত শিশুরা হলেন: ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ (৪) ও সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেনের কন্যা সাইফা আক্তার (৮)।
ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক ইয়াসিন আরাফাত বলেন, বুধবার সকাল আনুমানিক আটটার দিকে ধর্মগঞ্জ এলাকার বাসার কাছেই একটি দোকানে যাবার পথে দ্রুতগামী একটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক শিশু আব্দুল্লাহকে ধাক্কা দিলে সে ছিটকে সড়কের উপর পড়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ইজিবাইক চালক নিজেই শিশুটিকে শহরের খানপুরের নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ইজিবাইক চালক মো. সাগরকে (৩০) আটক করা হয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, দুপুরে শিমরাইল এলাকার একটি পুকুর থেকে সাইফার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কাঁচপুর স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন, বাড়ির অদূরে একটি পুকুরে দুই শিশু গোসল করতে নামে। সাতার না জানায় এক পর্যায়ে দুই শিশুই পানিতে ডুবে যায়। স্থানীয়রা একটি শিশুকে উদ্ধার করতে পারলেও অপরজন পানিতে তলিয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে দুপুর পৌনে দুইটার দিকে সাইফা আক্তার নামে শিশুটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফতুল্লায় আরও দুই মরদেহ উদ্ধার
দুপুর বারোটার দিকে ফতুল্লার যমুনা অয়েল কোম্পানির ঘাটে বুড়িগঙ্গা নদী থেকে এক ব্যক্তির ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ব্যক্তির নাম ইদ্রিস আলী ব্যাপারী বলে জানিয়েছে পুলিশ। ৪৫ বছর বয়সী এ ব্যক্তি ঢাকার শ্যামপুর তেলঘাট এলাকার বাসিন্দা।
পাগলা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পেশায় নৌকার মাঝি ইদ্রিস আলী গত ২২ সেপ্টেম্বর নৌকা থেকে পানিতে পরে নিখোঁজ হন। দুইদিন পর তার মরদেহটি কয়েক কিলোমিটার দূরে তার মরদেহ পাওয়া গেলো।
এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
একইদিন দুপুর বারোটার দিকে ফতুল্লার হাজীগঞ্জ এলাকা থেকে ঋতু আক্তার নামে ২২ বছর বয়সী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ঋতু আক্তার ওই এলাকার কাশেম মিয়ার কন্যা।
কাশেমের অভিযোগ, “সকাল নয়টার দিকে আমার মেয়ের স্বামী মাসুম মিয়া মোবাইলে জানায় যে, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে আমরা বাড়িতে এসে দেখি ঘর তালাবদ্ধ আর মাসুমও কোথাও নেই। পরে পুলিশে খবর দেই।”
ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক সঞ্জীব জোয়ার্দ্দার বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়ানতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
তিন বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের পর মাসুম ও ঋতুর বিয়ে হয়। দুই মাস আগে হাজীগঞ্জের ভাড়াবাসাটিতে ওঠেন এ দম্পতি।
তবে, এই ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী মাসুম মিয়া পলাতক রয়েছেন বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।