যুগের নারায়ণগঞ্জ:
ফতুল্লার প্রেমরোড এলাকায় মহিলা মাদ্রাসা এলাকার পাশে কোন এক বস্তিতে বেড়ে উঠা হামিমের। কেউ তাকে ছিনতাইকারী কেউবা টোকাই আবার অনেকে পুলিশের সোর্স হিসেবেই চিনে থাকেন। তবে, গত কয়েকমাস ধরে এই হামিমের নতুন পরিচয়ের আর্বিভাব ঘটেছে।
ফতুল্লার প্রেমরোড এলাকায় রোলিং মিলের পাশে বুড়ির বাড়ীতে ওপেন মাদক স্পট পরিচালনা করার কারনে বর্তমানে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবেই হামিমকে চিনে আসছেন। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তির ছত্র ছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে প্রেমরোড, এতিমখানা, নবীনগর, মহিলা মাদ্রাসা রোডসহ আশে পাশের এলাকায় খুঁচরা মরনঘ্যাতি ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করে আসছেন বলে মহল্লাবাসী অভিযোগ করেন। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত একাধিক সেলসম্যানের মাধ্যমে তার ইয়াবা ব্যবসা চলে আসছে। পাইকারী নয় বরং বর্ডার এলাকা থেকে ইয়াবা সরবরাহ করে একাধিক সেলসম্যানের মাধ্যমে প্রতিদিন কয়েক হাজার পিচ খুঁচরা ইয়াবা বিক্রি করে আসছে এই হামিম। মরনঘ্যাতি ইয়াবা বড়ি সরবরাহে সহজলভ্যতা থাকায় বিভিন্ন এলাকার মাদকসেবীরা হামিমের স্পট থেকে ইয়াবা সরবরাহ করে থাকেন। দীর্ঘ সময় প্রেমরোড রোলিং মিল সংলগ্ন বুড়ীর বাড়ী এবং মাদ্রাসারোডের আশে পাশে প্রকাশ্যে টোকাই হামিমসহ তার সহযোগীরা ইয়াবা বিক্রি করে আসলেও প্রতিবাদ করার সাহস টুকুও পাচ্ছে না!! কারন, মাদক ব্যবসায়ী হামিমের উপর রয়েছে প্রভাবশালীদের আর্শিবাদ! একদিকে মাদক সরবরাহে সহজলভ্যতা অন্যদিকে ভাল মানের ইয়াবা বড়ি সরবরাহ করার কারনে নাকি টোকাই হামিমের মাদক স্পটে সর্বদাই মাদক সেবীদের জটলা লেগেই থাকে!
এদিকে, উক্ত এলাকায় প্রকাশ্যে ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করার কারনে নষ্ট হচ্ছে সমাজ বিপদগামী হয়ে অনিশ্চিত পথে ধাবিত হচ্ছে আগামি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। তাই প্রেমরোড, এতিমখানা, ঢালীপাড়া, নবীনগরসহ আশে পাশের এলাকাকে মাদকমুক্ত রাখতে ইয়াবা ডিলার হামিমসহ তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের নয়া পুলিশ সুপার, র্যাব তথা যৌথ বাহিনীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় সাধারন মানুষ ও অভিভাবক মহল।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক স্কুল ছাত্রের অভিভাবক জানান, স্থানীয় এক স্কুলে মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশুনা করেন তার ছেলে। হঠাৎ করেই তার ছেলের আচরনে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটতে থাকে। রাতে না গুমানো, মোবাইলে আসক্তি, পড়াশুনায় বিরক্তি আসা, খিটখিটে মেজাজ এমনকি পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ আচরন করতে থাকা৷ একটা সময় তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তার ছেলে ইয়াবাসক্ত এবং মাদক ব্যবসায়ী হামিমের সলসম্যান হিসেবে ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রির সাথে জড়িয়ে পড়েছে। এমন সংবাদ পাওয়াটা যেন তার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মত! এক পর্যায়ে তার ছেলেকে মাদকাসক্ত নিরাময় পূনবাসন কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা করার মাধ্যমে মাদকমুক্ত করা হয় এবং কিছুদিনের মধ্যেই বিদেশ পাঠিয়ে দেয়া হয়। একই অবস্থা এলাকার শত শত যুবকের এমনটাই দাবি করেন এ অভিভাবক। শত শত যুবক মাদক ব্যবসায়ী হামিমের ইয়াবার ছোবলে আসক্ত হয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে অগ্রসর হচ্ছে। তাই, এ এলাকাকে মাদকমুক্ত করতে টোকাই হামিমের বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি। অণ্যথায়, সমাজ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের হাত থেকে কেউই বাঁচাতে পারবে না বলেও তিনি শংকা প্রকাশ করেছেন।
ফতুল্লার প্রমরোড এলাকার হামিমের মাদকের ওপেন মাদকের স্পটের বিষয়ে কথা হয় ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শরীফুল ইসলামের সাথে এবং মাদক সংশ্লিষ্ট সকল প্রমানাদিসহ উপস্থাপন করা হয় তার সামনে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি (শরীফুল) জানান, মাদক ব্যবসায়ী হামিমকে গ্রেপ্তারের জন্য অফিসারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই হামিম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে চলে আসবেন বলে তিনি এ প্রতিবেদকের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে আশ্বস্থ করেন। তিনি আরো বলেন, মাদককে জিরো টলারেন্সে নামিয়ে আনার জন্য আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। সে সাথে মাদক ব্যবসায়ী হামিমকে ধরার জন্য এলাকাবাসীর সহযোগীতা চেয়েছেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে মাদক ব্যবসায়ী হামিমের সাথে কথা হলে, সে তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। মাদক ব্যবসায়ী হামিম দাবি করেন, তিনি নাকি জাকির খানের রাজনীতি করেন! রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজনই এমন মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছেন। এদিকে বক্তব্য নেওয়ার সময় হঠাৎ করেই এক মাদকসেবী হামিমের কাছ থেকে ইয়াবা ক্রয় করতে আসেন!
সম্পাদক : রনি কুমার দাস, প্রকাশক : মোঃ আল আমিন মিয়া রকি কর্তৃক প্রকাশিত
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয় : পশ্চিম ভোলাইল মেলিটিরী বাড়ি কাশীপুর ফতুল্লা নারায়ণগঞ্জ।
যোগাযোগ : ০১৫১১-৭০৫৩৮৪, ০১৯১৬-১৮৭২৫৪.
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত