যুগের নারায়ণগঞ্জ:
জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া জামতলা এলাকার ভাড়াটিয়া মো. ফয়সাল খাঁন। একসময় কর্মরত ছিলেন বেসরকারি একমি ফার্মাসিউটিক্যালসে। কিন্তু দীর্ঘদিনের অসুস্থতা কারণে চাকরিটা আর করা হয়নি তার। পরে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে সামান্য বেতনের চাকরি নেন তিনি। তবে দিন দিন অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে ওঠে তার।
ফয়সাল জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনি ও মূত্রনালীর জটিল রোগে ভুগছেন। ডাক্তাররা জরুরি ভিত্তিতে অপারেশনের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু অপারেশনের খরচ বহন করার মতো অবস্থা নেই তার। বাবা-মা কেউ জীবিত নেই ফয়সালের। বাবার মৃত্যুর আগে ভিটে বাড়ি বিক্রি করে যাওয়ায় এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ফয়সাল বলেন, আমার চার বছরের মেয়ে শিফা একটি দুর্ঘটনায় ঠোঁট কেটে ফেললেও টাকার অভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারিনি। অসুস্থতার কারণে আমার ছোট ছেলে নাজাত মাহিকে প্রতিদিন মাত্র ২০০ টাকার বিনিময়ে কাজে পাঠাতে বাধ্য হয়েছি। একজন বাবা হিসেবে এটা আমার জন্য ভীষণ কষ্টকর। ফয়সালের স্ত্রী মুন্নী আক্তার সেলাইয়ের কাজ জানেন, কিন্তু সেলাই মেশিন কেনার মতো টাকা নেই তার।
দ্বারে দ্বারে ঘুরেও যখন সাহায্য পাননি, তখন তিনি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিয়ার কাছে আবেদন করেন। জেলা প্রশাসক তার দুর্দশার কথা শুনে পাশে দাঁড়িয়েছেন। ফয়সাল কৃতজ্ঞতার সঙ্গে বলেন, স্যার অনেক ভালো মানুষ। আমি একটি ঘরের জন্য আবেদন করেছি। উনি বিবেচনা করবেন বলেন আশ্বাস দিয়েছেন।
ফয়সাল বলেন, চিকিৎসার ব্যয় বহন করার সামর্থ্য আমার নেই। সংসার চালানোই কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে। সমাজের বিত্তবানরা যদি আমার পাশে দাঁড়ান তবে হয়তো আমি আবার সুস্থ হয়ে পরিবারের দায়িত্ব নিতে পারব।
ফয়সালের প্রতি মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম।