যুগের নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আগামী ২৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে। ২৬ আগস্ট শেষ হবে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা। এবারের নির্বাচনে পৃথক তিনটি প্যানেল অংশগ্রহণ করেছে। পরাজয়ের ভয় ও শঙ্কা থেকে বিএনপির বিদ্রোহী প্যানেল ও জামায়াত ইসলামীর প্যানেলকে মারাত্মক চাপে রেখেছেন বিএনপির সিনিয়র আইনজীবী নেতারা। হুমকি ধমকি ভয়ভীতি দেখিয়ে বিএনপির বিদ্রোহী প্যানেল থেকে তিন প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরাতে পারলেও বিএনপি প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী সরকার হুমায়ুন কবির পরাজয়ের মুখোমুখী দাঁড়িয়েছে। ওদিকে প্যানেলটির শক্ত প্রতিদ্বন্ধি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আনোয়ার প্রধানের জয় নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে নানা কারনে। তবে বিএনপি প্যানেল কোর্টপাড়ায় বৃহত্তর শোডাউন দিলেও আইনজীবীদের জনে জনে গিয়ে ভোট প্রার্থনায় ছিলেন কম সংখ্যক প্রার্থী।
আইনজীবীরা বলছেন, বিএনপির প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী সরকার হুমায়ুন কবিরের চেয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী বিএনপির বিদ্রোহী প্যানেলের সভাপতি রেজাউল করিম খান রেজা ও জামায়াত ইসলামীর প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী হাফিজ মোল্লা। নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার শুরুতেই সরকার হুমায়ুন কবির পিছিয়ে পড়েছেন ওই প্রার্থীর কাছে। এই নির্বাচনে সরকার হুমায়ুন কবিরের জয়ের কোনো সম্ভাবনাই দেখছে না আইনজীবীরা। ভোটে মুল লড়াইটা হতে পারে রেজা খান ও হাফিজ মোল্লার সঙ্গে। ওদিকে আওয়ামীলীগ ও সাধারণ আইনজীবীদের অব্যাহত হুমকি ধমকিতে আনোয়ার প্রধানের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে ওঠেছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর আনোয়ার প্রধানের অনুগামীদের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারনে আনোয়ার প্রধানের প্রতি চরমভাবে ক্ষুব্ধ আইনজীবীরা। গেল একটি বছর আইনজীবী সমিতির কোনো উন্নয়নমুলক কাজ তারা করেনি।
যদিও আইনজীবীরা মনে করছেন, সাধারণ সম্পাদক পদে আনোয়ার প্রধানের সঙ্গে এসএম গালিব ও মাঈন উদ্দীন মিয়ার ত্রিমুখী লড়াই হতে পারে। শেষতক আনোয়ার প্রধান ছিটকে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। বিএনপি প্যানেলের সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী আব্দুর গাফফার আইনজীবীদের কাছে তেমন জোরালোভাবে ভোটই প্রার্থনা করেনি। তার প্রতিদ্বন্ধি বিএনপির বিদ্রোহী প্যানেলের প্রার্থী সামসুজ্জামান খান খোকা ও জামায়তের প্রার্থী জাহাঙ্গীর দেওয়ানের মধ্যে লড়াই হতে পারে। সহ-সভাপতি পদে বিএনপির প্রার্থী সাদ্দাম হোসেনের চেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আলীর অবস্থান শক্তিশালী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক নয়কের চেয়ে জামায়াতের প্রার্থী আল আমিন সুবজকে এগিয়ে রাখছেন আইনজীবীরা।
এ ছাড়াও বিএনপি প্যানেল থেকে কোষাধ্যক্ষ পদে শাহাজাদা দেওয়ান, আপ্যায়ণ সম্পাদক পদে মাঈন উদ্দীন রেজা, লাইব্রেরী সম্পাদক পদে হাবিবুর রহমান, ক্রীড়া সম্পাদক প্রার্থী আমিনুল ইসলাম, আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী মামুন মাহামুদ মিয়া এবং কার্যকরী সদস্য পদে দেওয়ান আশরাফুল ইসলাম ছাড়াও বাকিদের জয়ের কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না আইনজীবীরা। সদস্য পদে আনিসুর রহমান, আবু রায়হান ও ফাতেমা আক্তার সুইটির সম্পর্কে আইনজীবীদের মাঝে নানা বিতর্ক রয়েছে। এই তিনজনই আনোয়ার প্রধানরে ম্যাসলম্যান হিসেবে কোর্টপাড়ায় কাজ করেন এবং অনেকের সঙ্গে বেয়াদবী করার অভিযোগ রয়েছে। তেহসিন হাসান দিপু নারায়ণগঞ্জের বহিরাগত হওয়ায় তার প্রতি আইনজীবীদের কোন আগ্রহ নেই। জামায়াত ইসলামীর প্যানেলের কার্যকরী সদস্য পদে জয়ের সম্ভাবনায় আছেন আফরোজা জাহান, তাওফিকুল ইসলাম দিপু ও গোলাম মোস্তফা।