যুগের নারায়ণগঞ্জ:
“জুলাই বিপ্লবের—বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই” এই স্লোগানকে সামনে রেখে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মজিবুর রহমান। বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বিল্লাল হোসেন রবিন, ঢাকা কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জি এইচ ফারুক, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন পরিচালক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো. সামসুজ্জামান, প্রধান সমন্বয়ক মো. সাইফুল ইসলাম রুবেল, মহাসচিব মো. সাখাওয়াত হোসেন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন ঢালী, শিক্ষক কাওসার আহমেদ, এসএম বিজয়, আল মামুন, তরিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ১৭ জুলাইয়ের প্রজ্ঞাপনে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে, যা বেসরকারি, এমপিও বহির্ভূত ও কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষার্থীদের প্রতি চরম বৈষম্যমূলক আচরণ। তারা বলেন, দেশের প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে অধ্যয়নরত প্রায় এক কোটি কোমলমতি শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্তে বঞ্চিত ও হতাশ।
বক্তারা বলেন, “সরকার যদি নন-এমপিও ইআইআইএন নম্বরধারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পরীক্ষার সুযোগ দেয়, তবে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।”
সহকারী শিক্ষক তাহমিনা আক্তার পুস্প বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীরা প্লে থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত নিয়মিত পড়াশোনা করছে। তাদের মেধার মূল্যায়ন করতে আমরা চাই সকল শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ দেওয়া হোক।”
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী অপর্ণা দাস বলেন, “সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থী আর আমরা—সবাই একই মায়ের সন্তান। মা যেমন দুই সন্তানকে এক চোখে দেখে, তেমনিভাবে সরকারকেও আমাদের দেখার অনুরোধ জানাই।”
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ১নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি নেজাম উদ্দিন শাহীন, ২নং ওয়ার্ডের জাকির উল্লাহ সুজুন, ৩নং মো. আজহারুল ইসলাম, ৫নং মো. শামীম, ৬নং মো. জাবের হোসেন, ৮নং মো. আল আমিন এবং ১০নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি এডভোকেট মো. খোরশেদ আলম প্রমুখ।
বক্তারা অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন বাতিল করে বেসরকারি ও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিতের দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।