যুগের নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ডিজিটাল ভূমি জরিপ কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হীরাঝিল এলাকা থেকে সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. মহসিন আলী সরদার ও সার্ভেয়ার নজরুল ইসলাম সরকারকে স্থানীয় ছাত্র ও সাধারণ জনতা পাঁচ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে।
বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেলে তাদেরকে পুলিশে হস্তান্তর করে ছাত্রজনতা।
জানা গেছে, প্রায় এক মাস ধরে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডিজিটাল ভূমি জরিপ কার্যক্রম চলছে। জমি ও বাড়িঘরের তথ্য সঠিকভাবে রেকর্ড করতে জমির মালিকরা সংশ্লিষ্ট সার্ভেয়ারদের সহায়তা নিচ্ছেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ আদায় ও বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিলেন অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা ও তাদের কয়েকজন সহকর্মী।
ভুক্তভোগীদের দাবি, জরিপের কাজে কাগজপত্র ঠিক থাকলেও কর্মকর্তারা নানা জটিলতা দেখিয়ে ঘুষ দাবি করতেন। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ জমতে থাকে। একপর্যায়ে হীরাঝিল এলাকার একটি মসজিদ থেকে মাইকিং করে ভুক্তভোগীদের ঘটনাস্থলে ডাকা হয়। এরপর অনেকেই এসে সরাসরি অভিযোগ করেন।
শাহজালাল নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, আমার সকল কাগজপত্র সঠিক থাকা সত্ত্বেও তারা ৮০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে ৩০ হাজার টাকায় কাজ করাই।
অহিদুর রহমান বলেন, জরিপ ক্যাম্পে গেলে তারা বলে মূল দলিল না থাকলে কাজ হবে না। পরে ইঙ্গিত দেয় টাকা দিলে হবে। বাধ্য হয়ে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেই।
মোখলেছুর রহমান বলেন, জমির একটি অংশ অন্য কারো জমিতে পড়ে গেছে এমন অভিযোগ এনে তারা ১ লাখ টাকা দাবি করে। পরে ৩০ হাজার টাকায় রাজি হয়।
কিডনি রোগী আমেনা বেগম বলেন, আমার ছেলে কাগজ নিয়ে গেলে তারা বলে আমাদের জায়গা কম আছে, কাজ করতে হলে টাকা লাগবে। শেষ পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা দিয়ে করাতে হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মেহরাব হোসেন প্রভাত বলেন, অনেক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল এখানে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না। নানা অজুহাতে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হচ্ছিল। তাই আমরা আজ হাতে-নাতে ধরেছি।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের দায়িত্ব সবার। প্রতিবাদ করতে হবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আজ একজন শুরু করলেও শেষ হয়েছে শতাধিক ভুক্তভোগী দিয়ে। আমরা চাই, এমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবাই রুখে দাঁড়াক।
ডিজিটাল ভূমি জরিপের ঢাকা জোনের প্রধান মাহমুদ জামান বলেন, ঘটনার কথা শুনেছি। ছাত্ররা দুই কর্মকর্তাকে থানায় দিয়েছে, তারা আটক নন। যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহীনুর আলম বলেন, দুই কর্মকর্তাকে আমাদের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। তারা এখনও আমাদের হেফাজতে রয়েছে। তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসলে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
সম্পাদক : রনি কুমার দাস, প্রকাশক : মোঃ আল আমিন মিয়া রকি কর্তৃক প্রকাশিত
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয় : পশ্চিম ভোলাইল মেলিটিরী বাড়ি কাশীপুর ফতুল্লা নারায়ণগঞ্জ।
যোগাযোগ : ০১৫১১-৭০৫৩৮৪, ০১৯১৬-১৮৭২৫৪.
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত