যুগের নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ন আহ্বায়ক নাজমুল হাসান বাবু। চব্বিশের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রণাঙ্গনে ছিলেন আপোষহীন এ নেতা।
তার সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েকজন দলীয় নেতাকর্মী। মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দেশনায়ক তারক রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মাথায় কাফনের কাপড় পরে বের হয়ে পড়েন স্বেরাচারী হাসিনা সরকারের পতনের আন্দোলনে। আন্দোলন চলাকালে স্বেরাচারীদলের ক্যাডার বাহিনীর হাতে থাকা অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদেরকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েন অপরদিকে পুলিশ লীগের টিয়ারসেল এবং বুলেটের আঘাতও আন্দোলন থেকে পিছু হঠাতে পারেনি তাদেরকে। অবশেষে ৫ আগস্ট বিজয় নিয়ে ঘরে ফিরেছেন তারা। এখন চান দেশের জন্য কাজ করতে এবং জনগনের সেবা করতে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে যুগের নারায়ণগঞ্জকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন নাজমুল হাসান বাবু।
আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোথায় ছিলেন, কি করেছেন; এমন প্রশ্নের উত্তরে নাজমুল হাসান বাবু বলেন, আন্দোলনের শুরুতে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা আপেল মাহমুদ, নাছির মাদবর, রফিকুল ইসলাম রকি, লেলিন আহম্মদ, সাগর, উজ্জল, শামীম, সজিব, স্বপন, সাকিব, আনিছ, ফারুক আহমেদ, শাকিল মোল্লা, জুম্মন আহমেদ, আলিম ইসলাম, রিপন কুমার, ফেরদাউস আহমেদ, রাজ আহমেদ, সৌরভ আকাশ, মাসুম খান, ফয়সাল, মৃদুল হাসান, সোহেল, শিহান, মোঃ রিফাত, মোঃ আরমান, মোঃ সজীব, মোঃ হৃদয়, মোঃ শাহাদাত মোঃ পারভেজ মোঃ জুয়েল আতাউর, সাকিবসহ আরো অনেকে আমাদের সঙ্গে ছিলেন।
১৮ জুলাই সাইনবোর্ডে আমরা স্বেচ্ছাসেবকদলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে অংশগ্রহণ করি এবং ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান নিই। ১৯ জুলাই আমরা সাইনবোর্ডে ও জালকুড়ি এলাকায় অবস্থান নিই। সেসময় মনে হয়েছে মৃত্যু হয়ত আমাদের আশেপাশেই ছিল।
তিনি বলেন, ১৯ জুলাই ছিল শুক্রবার। একটি মসজিদে জুমার নামাজ শেষ হওয়ার পরই সেখানে গুলি করে। এ ঘটনার পর জালকুড়ি ও ভুইগড় এলাকার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। স্থানীয় জনতাকে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকর্মীরা সেই এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এসবি গার্মেন্টসের সামনে আমার থেকে দুই মিটার দূরে এক সহযোদ্ধা গুলিবিদ্ধ হয়। হঠাৎ বিভিন্ন দিক থেকে গুলি শুরু হয়ে যায়।
নাজমুল হাসান বাবু আরও বলেন, ২১ তারিখ আমরা সাইনবোর্ড ও সানারপাড় এলাকায় নামি। এসময় সেই এলাকায় র্যাব, পুলিশ ও বিজিবি হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে। সেদিন অনেক ভাই শহীদ হন। কারফিউ জারির পর আমাকেসহ স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাদের গ্রেপ্তারে প্রশাসন চিরুনি অভিযান চালায়। ২ ও ৩ তারিখ আমরা চাষাঢ়া এলাকায় আন্দোলনে শরীক হই। ৪ আগস্ট দিপু ভূঁইয়ার (কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহবায়ক) নেতৃত্বে হাজারো মানুষ চাষাঢ়া এলাকায় জমায়েত হয়। সেদিন নতুন কোর্টের সামনে পুলিশের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবকদলের বহু নেতাকর্মী আহত হয়। আমাদের সামনেই গুলিবর্ষণ করেছিল পুলিশ।
৫ আগস্ট আমরা সাইনবোর্ড থেকে মিছিল নিয়ে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত যাই। সেখানে আমাদের টার্গেট করে পুলিশ গুলি করে। অল্প সময়েই সেখানে আমাদের কয়েকজন ভাই শহীদ হয়। এ ঘটনা খুবই হৃদয়বিদারক। আমরা দেখেছি মানুষ কীভাবে শহীদ হয়েছে তবুও দেশকে রক্ষা করতে পিছ পা হয়নি। কারন, আমরা জিয়াউর রহমানের আর্দশকে বুকে ধারন করি এবং দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে স্বেরাচারমুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে রাজপথে নেমেছিলাম। দল এবং দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকারে সর্বদাই প্রস্তুত থাকবেন বলেও তিনি দীপ্ত কন্ঠে এ প্রতিবেদকের কাছে মতবাদ ব্যক্ত করেন।
সম্পাদক : রনি কুমার দাস, প্রকাশক : মোঃ আল আমিন মিয়া রকি কর্তৃক প্রকাশিত
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয় : পশ্চিম ভোলাইল মেলিটিরী বাড়ি কাশীপুর ফতুল্লা নারায়ণগঞ্জ।
যোগাযোগ : ০১৫১১-৭০৫৩৮৪, ০১৯১৬-১৮৭২৫৪.
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত