যুগের নারায়ণগঞ্জ:
বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মোঃ আব্দুর রশিদ বর্তমানে আলোচনার শীর্ষে। এক সময়ের সমালোচনার কেন্দ্রে থাকা এই জনপ্রতিনিধি এখন স্থানীয় রাজনীতির অন্যতম প্রভাবশালী চরিত্র। তার রাজনৈতিক উত্থান নাটকীয়তা, কৌশল, এবং কিছুটা বিতর্কের এক মিশ্র উপাখ্যান।
আব্দুর রশিদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির একাংশ তার পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করে। তারা অভিযোগ করেন, তার অতীত কর্মকাণ্ড এবং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা দলের আদর্শের পরিপন্থী।
তবে সময় গড়াতেই দৃশ্যপট বদলে যায়। আব্দুর রশিদ সুকৌশলে ঐ সকল বিরোধীদের অনেককেই নিজের রাজনৈতিক বলয়ে টেনে নেন। এলাকায় গুঞ্জন ওঠে, অনেক নেতাকে তিনি অর্থের বিনিময়ে পাশে নিয়েছেন। যদিও এসব অভিযোগের বিষয়ে রশিদ কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেননি।
আব্দুর রশিদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার ঘোষণার পর ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আকিলউদ্দিন সিকদার হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। রায়ে আব্দুর রশিদের নিয়োগ স্থগিত করে পূর্বের প্যানেল, অর্থাৎ আকিলউদ্দিন সিকদারকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু আব্দুর রশিদ হাল ছাড়েননি। তিনি হাইকোর্টে আপিল করে রায় পরিবর্তন করাতে সক্ষম হন, এবং পুনরায় চেয়ারম্যানের দায়িত্বে বহাল থাকেন।
এলাকাবাসীর মতে, রশিদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতাই তাকে অন্য জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে আলাদা করেছে। সাধারণ বিশ্বাস “যার পেটে ক্ষুধা নেই, সে সরকারি বরাদ্দ মারে না।” ফলে জনপ্রিয়তা ধরে রাখা সহজ হয়েছে তার পক্ষে।
আব্দুর রশিদ বিএনপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সময় নেননি। ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আলী, বক্তাবলী ইউনিয়ন ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক সুমন আকবর, যুগ্ম আহ্বায়ক মীর আলমগীর, জেলা কৃষক দলের নেতা ইদ্রিস আলী প্রধান, প্রফেসর সাইদুর রহমান বাচ্চু সহ প্রভাবশালী নেতাদের পাশে টেনে নিজের রাজনৈতিক ঘাঁটি মজবুত করেন।
এক সময় আওয়ামী লীগপন্থী নেতা শামীম ওসমান ও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শওকত আলীর সাথে পোস্টার ও ব্যানারে থাকায় রশিদ ছিলেন তীব্র সমালোচনার মুখে। তবে আজ তিনি বিএনপির কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন।
আব্দুর রশিদের রাজনৈতিক জীবনের গল্প সমালোচনা থেকে কৌশল, মানববন্ধন থেকে মিত্রতা, আদালত থেকে চেয়ার পুনরুদ্ধার সবই তাকে বক্তাবলীর রাজনীতির অন্যতম "পাকা খেলোয়াড়" হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।