যুগের নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ী শাহীন মিয়া (৩৫)-কে অপহরণ করে শারীরিক নির্যাতনের পর ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় মূল হোতা মেহেদী হাসান (৩০)-কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার মেহেদী হাসান বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়নের শুভকরদী এলাকার আলমগীর মোল্লার ছেলে।
এ ঘটনায় অপহৃত ব্যবসায়ী শাহীন মিয়া বাদী হয়ে মেহেদী হাসানসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় মামলা করেছেন।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার (২৬ মে) বিকেল ৫টার দিকে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার নিমতলা ফুটওভার ব্রিজের নিচ থেকে শাহীন মিয়াকে অপহরণ করা হয়। এরপর তাকে বন্দর উপজেলার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেউলী চৌরাপাড়া বটতলায় একটি অজ্ঞাত ক্লাবে আটকে রেখে ব্যাপক মারধর ও নির্যাতন চালানো হয় এবং ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শাহীন মিয়া পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া থানার ধানখালি এলাকার শহিদুল ইসলামের ছেলে এবং পেশায় একজন ব্যবসায়ী। অপহরণের মূলহোতা মেহেদী হাসান আগে তার প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। চাকরির সময়ে নানা অপকর্মের কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরি হারানোর পর থেকেই শাহীন মিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করার পরিকল্পনা করতে থাকে মেহেদী। এর অংশ হিসেবে ফতুল্লার তল্লা এলাকার আলমগীর হোসেন মিয়ার মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (২৮) নামে এক নারী শাহীন মিয়ার সঙ্গে ইমুতে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে।
পরে সুমাইয়ার আমন্ত্রণে সোমবার বিকেলে শাহীন মিয়া নিমতলায় গেলে একটি চায়ের দোকান থেকে সাঈদ, সিজান, রুবেল ও রনি নামে চারজন ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে একটি গাড়িতে তুলে অপহরণ করে।
শাহীন মিয়াকে আটক রেখে তার মানিব্যাগ থেকে ২৫ হাজার টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে তাকে দিয়ে ৫টি ১০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়া হয়। এক পর্যায়ে তাকে মেহেদী হাসানের বাসায় নিয়ে আবারো নির্যাতন চালানো হয় এবং ভিডিও ধারণ করে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মুক্তিপণ না দিলে ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় অপহরণকারীরা।
পরে বুধবার (২৮ মে) রাত ৩টায় চোখ বাঁধা অবস্থায় ফরাজীকান্দা মেইন রোডে ফেলে যায় অপহরণকারীরা। সেখানে টহল পুলিশের গাড়ি দেখে শাহীন মিয়া সাহস করে থামানোর সংকেত দেন এবং বিষয়টি জানান। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে মেহেদী হাসানকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।