যুগের নারায়ণগঞ্জ:
গাজায় ইসরায়েলের নতুন করে হামলা চালানোর প্রতিবাদে এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শনিবার বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব। এতে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আক্তার, এবং গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের জেলা সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, “বিশ^ জনমত উপেক্ষা করে মার্কিন মদদে ফিলিস্তিনে ইসরায়েল আবারও বর্বর নৃশংস হামলা শুরু করেছে। ৪২ দিনের যুদ্ধ বিরতির পর ১৭ মার্চ মধ্যরাত থেকে ইসরায়েল গাজায় হামলা শুরু করে। এখন পর্যন্ত হামলায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, এর মধ্যে ২০০ এর অধিক শিশু, নারী ও বয়স্ক মানুষ রয়েছে। গত ১৭ মাসে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ১৮ হাজারেরও বেশি শিশু।”
তারা আরও বলেন, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা থেকে মানুষজনকে সরে যেতে বলেছে এবং দাবি করেছে, “গাজায় নৃশংতা কেবল মাত্র শুরু।” ইসরায়েল হাজার হাজার টন বোমা ফেলে ফিলিস্তিনকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। যদিও এই হামলার বিরুদ্ধে খোদ ইসরায়েল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, কিন্তু ইসরায়েল তা কোনো তোয়াক্কা করছে না, কারণ তাকে সমর্থন করছে যুদ্ধবাজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা থেকে সেখানকার বাসিন্দাদের সরে গিয়ে খালি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে দিতে বলেছে এবং তার সঙ্গে বৈঠক করে ট্রাম্প নতুন হামলার পরিকল্পনা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গাজায় নতুন করে হামলা শুরু হয়েছে।
এছাড়া, তারা বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যের তেল ও খনিজসম্পদের দখল এবং ওই অঞ্চলে সামরিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য ইসরায়েলকে ব্যবহার করছে সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা। ইসরায়েলকে অস্ত্র ও অর্থসহ সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা। এর মাধ্যমে জায়নবাদী ইসরায়েল গণহত্যায় মেতে উঠেছে।”
নেতৃবৃন্দ আরও জানান, “এই হামলার ফলে গাজার ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও গির্জা ধ্বংস হয়েছে; পানি ও পয়োনিষ্কানের ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সরবরাহ ধ্বংস হয়েছে এমনকি জাতিসংঘ ভবনও ধ্বংস করা হয়েছে। গাজার ৮৩ শতাংশ গাছপালা, ৮০ শতাংশের বেশি কৃষিজমি ও ৯৫ শতাংশ গবাদিপশু নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। গাজায় যে হামলা চালানো হচ্ছে তা অতীতের যেকোনো যুদ্ধের ভয়াবহতাকে হার মানিয়েছে।”
নেতৃবৃন্দ বলেন, “এখন সেখানে কোন ত্রাণ পৌঁছাতে পারছে না, যার কারণে সেখানকার মানুষ ক্ষুধা, দুর্ভিক্ষ এবং চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করছে।”
এই ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে নেতৃবৃন্দ বিশ্ববাসীকে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান এবং গাজায় মানবিক সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। তারা বাংলাদেশ সরকারের কাছে গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলা ও গণহত্যা বন্ধের দাবি আন্তর্জাতিক সকল ফোরামে তুলে ধরার এবং গণহত্যাকারী নেতানিয়াহু এর বিচারের দাবি উত্থাপন করার আহ্বান জানান।